খাগড়াছড়ির দীঘিনালা-সাজেকে সেতু ধসে পড়ার দ্বিতীয় দিনেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

খাগড়াছড়ির পার্বত্য জেলার দীঘিনালা উপজেলা-সাজেক সড়কে সেতু ধসে পড়ার দ্বিতীয় দিনের (৮ই মার্চ) মতো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

পাথর বোঝাই ট্রাকসহ মাইনী নদীর বেইলি সেতটিু ধসে পড়ায় দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র সাজেক ও বাঘাইছড়ির সাথে খাগড়াছড়িসহ সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ দ্বিতীয় দিনের মতো বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ধসে পড়া সেতুটি সচল করতে কাজ শুরু করে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোর ইসিবি’র সদস্যরা। তবে দীঘিনালা থানা বাজার এলাকায় বিকল্প ফুট ব্রিজ দিয়ে পর্যটকবাহী ছোট গাড়িগুলো পারাপারের ব্যবস্থা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

গত মঙ্গলবার (৭ই মার্চ) সকাল সোয়া ১০টার দিকে পাথর বোঝাই একটি ট্রাক উঠে পড়লে বেইলি সেতুটি ধসে পড়ে। ফলে বাংলার ভূ-স্বর্গ খ্যাত সাজেক ভ্যালিতে পথে পর্যটকসহ বাঘাইছড়ির সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলে চরম দুর্ভোগের পড়ে রাঙামাটির সাজেক ও বাঘাইছড়িগামী যাত্রীরা।

এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী টাস্কফোসের চেয়ারম্যান(প্রতিমন্ত্রী সমমযাদা সম্পন্ন) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, জেলা প্রশাসক মো: সহিদুজ্জামান, পুলিশ সুপার মো: নাইমুল হক ও সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোর ইসবি ২০-এর উপ-অধিনায়ক মেজর আবু নোমান মোহাম্মদ মইনুল ইসলামসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন দ্রুুত সময়ের মধ্যে ধসে পড়া বেইলি ব্রিজটি সচল করার আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সীমান্ত সড়কের কাজের জন্য নিয়ে যাওয়া পাথর বহনকারী একটি ভারী ট্রাক বাঘাইছড়ি উপজেলার দিকে প্রবেশের সময় সেতুর ওপর উঠলে পাটাতন ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। এ সময় চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খাগড়াছড়ির দীঘিনালার মাইনী বেইলি সেতু ধসে পড়েছে। মঙ্গলবার(৭ই মার্চ) সকাল সোয়া ১০টার দিকে পাথর বোঝাই একটি ট্রাক উঠে পড়লে বেইলি সেতুটি ধসে পড়ে। এতে হতাহত হবার কোনো ঘটনা হয়নি।
দ্রুুত সময়ের মধ্যে ধসে পড়া বেইলি ব্রিজটি সচল করার আশ্বাস দিয়েছেন সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোরের কর্মকর্তারা। একই সাথে বিকল্প ব্রিজ দিয়ে চলছে পর্যটকবাহী ছোট গাড়িগুলো।

দীঘিনালা ফায়ার স্টেশনের সাব-অফিসার পংকজ বড়ুয়া জানান, ওভারলোডের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। আমরা যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ করেছি।

দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরাফাতুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে দ্রুুততম সময়ের মধ্যে সেতুটি মেরামত করে যান চলাচলের জন্যে অনুরোধ করেছেন। তিনি আরো জানান, বিকল্প হিসেবে সাজেক ফেরত পর্যটকদের গাড়িবহর থানা বাজারের ফুট ব্রিজ দিয়ে পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান, ধসে পড়া বেইলি সেতুটি দ্রুুত সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে স্বচল হতে কিছু দিন সময় লাগবে।

সড়ক ও জনপথ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ৩ দশক আগে অস্থায়ীভাবে নির্মিত মাইনি বেইলি সেতুটি। ২০১৭সালের ২৭শে অক্টোবর কাঠ বোঝাই ট্রাকসহ আরো একবার ধসে পড়েছিল। সে সময় সাজেক পর্যটন কেন্দ্রসহ রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ ৭দিন বন্ধ ছিল।

এর ফলে রাঙামাটির সাজেক ও বাঘাইছড়ির সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মাইনী বেইলি সেতুটি ধসে পড়ার আশঙ্কা নিয়ে গত ২৬শে জানুয়ারি বিভিন্ন প্রত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। অবশেষে শঙ্কাই প্রমাণিত হলো।