গাজীপুরে স্বামীকে বাস থেকে নামিয়ে স্ত্রীকে গণধর্ষন : ৫ জন গ্রেফতার

টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে যখন সারা দেশ তোলপাড় তার একদিন যেতে না যেতে গাজীপুরে চলন্ত বাসে এক পোশাক কর্মীকে (২৩) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। স্বামীকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দিয়ে ওই পরিবহনের পাঁচ শ্রমিক মিলে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী থানায় মামলা করলে অভিযুক্ত ৫ জনকে গ্রেফতার ও বাস জব্দ করেছে পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন, মো. রাকিব মোল্লা (২৩), সুমন খান (২০), মো. সজিব (২৩), মো. সুমন হাসান (২২) ও মো. শাহিন মিয়া (১৯)।

থানায় দায়ের করা অভিযোগ ও ভিকটিমের স্বজনদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে নওগাঁ থেকে গাজীপুর মহানগরের ভোগড়া বাইপাসে স্বামীর সঙ্গে বাস থেকে নামেন ওই নারী।

ময়মনসিংহের স্কয়ার মাস্টারবাড়ী এলাকায় ভাড়া বাড়িতে যেতে অপর একটি গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারা। রাত ৩টা ১০ মিনিটে স্কয়ার মাস্টারবাড়ী যাওয়ার উদ্দেশে তাকওয়া পরিবহণে উঠে বাসে আরও ৬-৭ জন যাত্রী দেখতে পান। রওনা দেওয়ার কিছু সময় পর বাসটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের হোতাপাড়ায় পৌঁছালে ২ যাত্রী নেমে যান।

রাত ৩টা ৪০মিনিটে বাসটি মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা ফ্লাইওভার পার হয়ে কিছুদূর সামনে গেলে চলন্ত বাসে থাকা অজ্ঞাতনামা ২-৩ জন লোক হঠাৎ ওই নারীর স্বামীকে মারধর শুরু করেন।

তাদের হাত দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করেন নারী। এ সময় অজ্ঞাত লোকজন ওই নারীর মুখ চেপে ধরে রাখেন এবং স্বামীকে মারপিট করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এমসি বাজার এলাকায় চলন্ত বাস থেকে ফেলে দিয়ে বাসটি নিয়ে ঢাকার দিকে চলে যান।

ওই নারীর স্বামী বাস থেকে পড়ে আঘাত পেয়ে স্কয়ার মাস্টারবাড়ী এলাকার বোনের বাসায় চলে যান। শনিবার সকালে অপরিচিত একটি মোবাইল থেকে ফোন করে ওই নারী বিস্তারিত ঘটনা এবং জয়দেবপুর থানায় আছেন বলে স্বামীকে জানান। পরে স্বামী ওই নারীর কাছে যান এবং বিস্তারিত ঘটনা শোনেন।

এ সময় ভিকটিম তার স্বামীকে জানান, তাকে (স্বামী) গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়ার পর অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জন তার চোখ বেঁধে ও মুখ চেপে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। এ সময় নারীর কাছে থাকা একটি মোবাইল ফোন, নগদ ১০ হাজার ৫শ টাকাসহ সঙ্গে থাকা অন্যান্য মালামাল নিয়ে চলে যান।

গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, ভিকটিম নারীর অভিযোগ ও শ্রীপুর থানায় তার স্বামীর মামলা রুজুর পর অভিযানে নামে শ্রীপুর থানা ও গাজীপুর জেলা পুলিশের একাধিক দল।

জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ৫ জনকে গ্রেফতার ও বাসটি জব্দ করা হয়।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত ৫ জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে এবং লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।