ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন স্থগিত

কারিগরি ত্রুটির কারণে স্থগিত করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ সেশনের স্নাতক প্রথম বর্ষের অনলাইন ভর্তি আবেদন। বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, কারিগরি জটিলতার কারণে অনার্স (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার অনলাইন আবেদন বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামী রোববার (১৪ মার্চ) পর্যন্ত আবেদন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে। আশা করছি সোমবার থেকে আবারও আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে।

এর আগে, গত ৮ মার্চ ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) ১ম বর্ষের অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর মোট পাঁচটি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সেগুলো হলো- ক-ইউনিট, খ-ইউনিট, গ-ইউনিট, ঘ-ইউনিট এবং চ ইউনিট।

এসব ইউনিটের মধ্যে ক-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২১ মে, খ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২২ মে, গ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত ২৭ মে, ঘ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৮ মে এবং চ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা (সাধারণ জ্ঞান) অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।

প্রতিটি ইউনিটের পরীক্ষা ঢাকাসহ আটটি বিভাগীয় শহরে সকাল ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

আবেদন যোগ্যতা

ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীদের ন্যূনতম যোগ্যতা হিসেবে ‘ক’ ইউনিটের জন্য মাধ্যমিক ও সমমান এবং উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় (৪র্থ বিষয়সহ) প্রাপ্ত জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.৫ (আলাদাভাবে জিপিএ ৩.৫), ‘খ’ ইউনিটের জন্য জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.০ (আলাদাভাবে ৩.০), ‘গ’ ইউনিটের জন্য জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.০ ( আলাদাভাবে ৩.৫), ‘ঘ’ ইউনিটের জন্য মানবিক শাখার ক্ষেত্রে জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.০ (আলাদাভাবে ৩.০) ও বিজ্ঞান শাখার ক্ষেত্রে জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.৫ (আলাদাভাবে ৩.৫) এবং ‘চ’ ইউনিটের জন্য জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৭.০ (আলাদাভাবে জিপিএ ৩.০) থাকতে হবে।

পরীক্ষার মানবণ্টন

‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ ও ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৬০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। শুধু ‘চ’ ইউনিটের পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ৬০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। ‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ ও ‘ঘ’ ইউনিটের এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট এবং লিখিত পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। ‘চ’ ইউনিটের এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য ৩০ মিনিট এবং লিখিত পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

অলাইনে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের করণীয়

– যেকোনো ইউনিটে ভর্তির আবেদন https://admission.eis.du.ac.bd ওয়েবসাইট থেকে করা যাবে।
– ভর্তির আবেদনের জন্য শিক্ষার্থীর উচ্চমাধ্যমিক এবং মাধ্যমিকের তথ্য লাগবে।
– বর্তমান ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর, পিতা/মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর (ঐচ্ছিক) লাগবে।

– শিক্ষার্থী যে বিভাগীয় শহরের কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আগ্রহী তা লাগবে।
– কোটা এবং স্ক্যান করা একটি ছবির প্রয়োজন পড়বে।
– ভর্তির আবেদন ফি তাৎক্ষণিক অনলাইনে বা চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে (সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী) নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে জমা প্রদান করা যাবে।
– আবেদন ও ফি জমার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উক্ত ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
– এ-লেভেল/ও-লেভেল/সমমান বিদেশী পাঠক্রমে বা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সমতা নিরূপণের জন্য https://admission.eis.du.ac.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে ‘সমমান আবেদন’ বা ‘Equivalence Application” মেনুতে আবেদন করে তাৎক্ষণিকভাবে অনলাইনে নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে। সমতা নিরূপণের পর প্রাপ্ত ‘Equivalence ID’ ব্যবহার করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতো তারা একই ওয়েবসাইটে লগইন করে ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারবে।

কোটায় ভর্তি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক/কর্মকর্তা/কর্মচারীর ওয়ার্ডকোটা (কেবল ছেলে/মেয়ে/স্বামী/স্ত্রী) উপজাতি/ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, হরিজন ও দলিত সম্প্রদায়, প্রতিবন্ধি (দৃষ্টি, বাক, শ্রবণ ও শারীরিক) ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/মুক্তিযোদ্ধার নাতি/নাতনিসহ, খেলোয়াড় (শুধু বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র/ছাত্রীদের) কোটায় ভর্তি প্রার্থীদেরকে সংশ্লিষ্ট ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের ৭ (সাত) দিনের মধ্যে ওই ইউনিটের ডিন অফিস থেকে ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র প্রদর্শনপূর্বক নির্ধারিত ফরম সংগ্রহ করতে হবে।

(ক) ওয়ার্ড কোটার ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট অফিস প্রধানের প্রত্যয়নপত্রসহ।
(খ) উপজাতি/ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটার ক্ষেত্রে স্ব-স্ব উপজাতি/ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী প্রধান/জেলা প্রশাসক এর সনদপত্রের সত্যায়িত ফটোকপিসহ
(গ) হরিজন ও দলিত সম্প্রদায় কোটার ক্ষেত্রে হরিজন ও দলিত সম্প্রদায় সংগঠন প্রধানের সনদপত্রসহ।
(ঘ) প্রতিবন্ধী কোটার (দৃষ্টি, বাক, শ্রবণ ও শারীরিক) ক্ষেত্রে সঠিকতার সনদপত্রসহ।
(ঙ) মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/মুক্তিযোদ্ধার নাতি/নাতনিসহ কোটার ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত সনদপত্র অথবা ১৯৯৭ সন থেকে ২০০১ সন পর্যন্ত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অধীনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রতিস্বাক্ষরিত মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্রসহ।
(চ) খেলোয়াড় কোটায় মাত্র বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীরা আবেদন করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক সনদপত্র প্রাপ্ত হতে হবে।

উপরোক্ত কোটার নির্ধারিত ফরম সংগ্রহ করে তা যথাযথভাবে পূরণ করে যে কোটায় ভর্তি হতে ইচ্ছুক তার প্রত্যয়নপত্র/সনদপত্র/ প্রমাণপত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিট প্রধানের অফিসে অফিস চলাকালীন সময়ে জমা দিতে হবে।

যাদের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত সনদ নেই কিন্তু সনদের জন্য আবেদন করেছে তাদের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে। তবে ভর্তির জন্য চূড়ান্ত নির্বাচনের পূর্বে অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত সনদপত্র জমা দিতে হবে।

পরীক্ষার্থীদের প্রতি নির্দেশনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে সব ইউনিটের ভর্তি–ইচ্ছুক প্রার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন, ক্যালকুলেটর, ইলেকট্রনিক ডিভাইসসংবলিত ঘড়ি ও কলম ব্যবহার করা সম্পূর্ণ নিষেধ। ওয়েবসাইটে প্রদত্ত ভর্তি-নির্দেশিকায় উল্লেখ নেই ভর্তিসংক্রান্ত এমন কোনো তথ্য জানতে হলে সংশ্লিষ্ট ইউনিট কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে হবে।