নরসিংদীর রায়পুরায় আদালতের রায় অমান্য করে জমি দখল ও হুমকির অভিযোগ!

আদালতের রায় অমান্য করে নরসিংদীর রায়পুরায় বিবাদমান জমি বেদখল করে বিল্ডিং নির্মাণ করার চেষ্টার অভিযোগ ও সম্পত্তির মালিকানা দাবি করেছে কতিপয় ভূমিদস্যুরা।

এদিকে, বেদখল হওয়া ভূমি পুনরুদ্ধারের জন্য ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা থানায় অভিযোগ করেছে এবং মেয়রকে জানিয়েও প্রতিকার না পেয়ে নিরুপায় হয়ে গত মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

গত মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাত প্রায় ৯টায় নরসিংদীর রায়পুরা প্রেস ক্লাব হল রুমে সংবাদ সম্মেলনে রায়পুরা পৌর শহরের কলাবাড়িয়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে সোহেল ভুইয়ালিখিত বক্তব্য পাঠ করেসংবাদকর্মীদেরকে জানান, নিজস্ব পৈর্তৃক সম্পত্তি বিক্রি করে ও ব্যবসার টাকা দিয়ে রায়পুরা পশ্চিমপাড়া এলাকার প্রদীপ সাহা, চন্দনা দে ও খোকন দে’র নিকট থেকে রায়পুরা মৌজার সিএস ও এসএ ২৬০নং এবং আরএস ৬০২দাগে পৃথকভাবে ৬ শতাংশ জমিক্রয় করি।

পরে রায়পুরা দলিল লিখক সমিতির সভাপতি আব্দুল মোতালিব, সিদ্দিকুর রহমান, ইদ্রিস আলী, ইব্রাহিম খলিল সেন্টু ও মনিরুজ্জামান মিন্টুসহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজন মিলে আমার টিনের ঘর ভেঙে সেখানেবিল্ডিং নির্মান শুরু করার চেষ্টা করে। তাৎক্ষনিক খবর পেয়েআমাদের জমিতে গেলে তারা দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলার চেষ্টা করে ও দৌড়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে রায়পুরা থানা পুলিশের সহযোগিতা নিলে তারা প্রতিপক্ষের লোকদের সীমানা নির্ধারণ করবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করে। পরে মেয়র সাহেবকে লিখিতভাবে এই ঘটনা জানানো হয়। কোন উপায় না পেয়ে আদালতের শরনাপন্ন হলে আদালত সকল কাগজপত্র পর্যালোচনা করে এই জায়গার উপরে ১৪৫ ধারা জারি করে দেয়।
এছাড়াও অভিযুক্ত ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বেবিভিন্ন জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, কিছু হলেই তাঁরা সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এসে সাধারন মানুষের ওপর অত্যাচার করে নিয়ে যায়। কেউ প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলে তাকে মারধরসহ মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ কোন সুষ্ঠু প্রতিকার পাওয়া যায় না। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ফারুক মিয়া ও সোহেল ভুইয়ার পরিবারের লোকজন স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে দোষীদের শাস্তির দাবি করেন। এসময় ভুক্তভোগী পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ও উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলন থেকে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সময়ে এই ভূমিদস্যু চক্রটি এলাকায় বিএনপির রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জমি দখল করে আসছে।

এদিকে রায়পুরা পৌরসভার এক কর্মকর্তার নিকট অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নিকট উক্ত বিষয়ে একাধিকবার নোটিশ জানানো হলেও পৌরসভা ও আদালতের রায়’কে সম্পূর্ন বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেদের মত ভূমি দখল করার চেষ্টা করছে।

এদিকে রায়পুরা থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ও ভুক্তভোগীদেরকে বিভিন্ন সময়ে গ্রাম্য সালিশ ও আপোষ করার চেষ্টা করলে তা ব্যর্থ হয়। রাতের অন্ধকারে উক্ত ভূমি দখল করার বিষয়ে থানা-পুলিশ অবগত আছে বলে জানা গেছে।

নরসিংদীর জেলা প্রশাসক বদিউল আলম সংবাদকর্মীদেরকে জানান, বিষয়টি রায়পুরা ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিতভাবে অভিযোগ দেওয়া হলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যেহেতু বর্তমান সরকার ভূমির বিষয়ে নতুন আইন করেছেন, ভূমির প্রকৃত মালিককেই তার ভূমি বুঝিয়ে দেওয়া হবে।