নেওয়া হয়নি কোনো অনুমোদন, করা হয়নি কোনো রেজুলেশন

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় স্কুল মাঠের গাছ বিক্রি করলেন প্রধান শিক্ষক

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার নাওয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের কোনো অনুমোদন বা টেন্ডার ছাড়াই বিদ্যালয় মাঠের ১টি কাঁঠাল গাছ বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (৬ আগস্ট) সকাল ১০টায় সরেজমিনে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখতে ও জানতে পারা যায়, বিদ্যালয় মাঠের উত্তর পার্শ্বে পরিত্যাক্ত পুরাতন বিল্ডিং এর সামনে প্রায় ৮/১০ হাজার টাকা মুল্যের ঝড়ে উপড়ে পড়া একটি কাঁঠাল গাছ কেটে বিক্রি করা হয়েছে। গাছের মুড়া তুলে ফেললেও স্থানীয় লোকজনসহ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ওই বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকা তুলে ফেলা মুড়ার জায়গায় গাছ ছিল বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, বিদ্যালয় মাঠের উত্তর পার্শ্বে পরিত্যাক্ত পুরাতন বিল্ডিং এর সামনের গাছ গুলো প্রায় অর্ধশত বছরের। অর্ধশত বছরের ওই গাছটি প্রায় ৩মাস আগে ঝড়ে উপড়ে পড়ে ছিল। গাছটি ভালোই মোটা ও লম্বা ছিল। ৪/৫দিন আগে প্রধান শিক্ষক গাছটি বিক্রি করে দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষক কিভাবে বিক্রি করেছেন তা আমরা বলতে পারছিনা। আপনি (সাংবাদিক) ভাই যার কাছ থেকে জানতে পেরেছেন তার কাছ থেকেই ভিডিওসহ জেনে নিন। আমরা আপনাকে (সাংবাদিক ভাই) এ বিষয়ে ভিডিও বক্তব্য দিতে পারছিনা।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেনের সাথে কথা হলে, তিনি গাছ বিক্রির কথা স্বীকার করেন এবং এ বিষয়ে লেখা লেখি না করার জন্য বলেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির রেজুলেশন ও টেন্ডার অনুমোদন ছাড়া কি ভাবে সরকারি বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন জানতে চাইলে তার উপযুক্ত কোন উত্তর তিনি দিতে পারেননি। তবে বলেন, আমি যা করব সভাপতি তাই মেনে নিবেন। তিনি আরোও বলেন, গাছটি ৫হাজার টাকায় বিক্রি করেন। পরে গাছ ব্যবসায়ী তাকে ৪হাজার ৭০০টাকা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে নাওয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও নাওয়াপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ আফতাবুল হক জানান, ‘গাছটি প্রায় কয়েকমাস ধরে ঝড়ে উপড়ে পড়ে ছিল তা আমি জানি। প্রধান শিক্ষক কখন গাছ কাটছেন এবং বিক্রি করছেন তা আমি বলতে পারছিনা। গাছ কাটার বিষয়ে কোন সভা বা রেজুলেশন করা হয়নি।’

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে অবগত নই। তবে স্কুলের গাছ কাটতে হলে নিয়ম মোতাবেক অনুমতি নিতে হবে। আমি বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গাছ কাটতে হলে স্কুল কমিটি রেজুলেশন আকারে বিষয়টি আমাকে জানাতে হবে। ওই বিদ্যালয়ে গাছ কাটার বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’