পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় স্কুল শিক্ষকদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় দুই স্কুল শিক্ষকের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজী মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৯ আগষ্ট মো. ওমর ফারুক বাদী হয়ে শিক্ষক মোফাজ্জেল হোসেন ফোরকান ও তোফাজ্জেল হোসেনসহ ৭ জনের নামে বিজ্ঞ আদালতে একটি চাঁদাবাজী মামলা আনায়ন করেন।

মামলার বাদী ফারুক উপজেলার নীলগঞ্জ ইউপির এলেমপুর গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে। যার মামলা নম্বর সিআর ১০১৪/২৩। দায়েরকৃত মামলার ১ নং আসামী মোফাজ্জেল হোসেন ফোরকান কলাপাড়া পৌর শহরের বাসীন্দা। তিনি পাখিমারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

এছাড়া অপর শিক্ষক ২ নং আসামী তোফাজ্জেল হোসেন ধানখালী গাজী মান্নান এন্ড হাফিজা নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। আর মামলায় উল্লেখিত ৩নং আসামী আহসান হাবীব ঢাকায় ইসলামী ব্যংাকে কর্মরত। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জমি সংক্রান্ত বিরোধে একই বংশের ভাতিজা সম্পর্কে মো. ওমর ফারুক একটি মিথ্যা চাঁদাবাজী এবং মারপিটের মামলা দায়ের করেছেন। প্রকৃত পক্ষে ঘটনার দিন উল্লিখিত তিনজন কেউ ওই এলাকায় ছিলেন না।

সরেজমিনে গেলে মামলায় উল্লেখিত স্বাক্ষীগন জানান, ঘটনার সময় ও দিন শুক্রবার উল্লেখ করে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মূলত ২৫ আগষ্ট কোন ধরনের মারপিট কিংবা চাঁদাদাবীর ঘটনা ঘটেনি। মামলার ৪ নং স্বাক্ষী শাহজাহান হাওলাদার জানান, আমাকে মামলায় স্বাক্ষী করা হয়েছে কিন্তু আমি জানিনা। আর যে বিষয় অভিযোগ করা হয়েছে তা কখন ঘটলো প্রশ্ন তার। ১ নং স্বাক্ষী জাকির মুন্সি বলেন, আমার সামনে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। আমাকে বলেনি যে স্বাক্ষী দিছে।

এদিকে স্থানীয় বাসীন্দা সত্তোরোর্ধ মোতালেব হাওলাদার জানান, চাচা ভাতিজার মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ আছে। কিন্তু যে মামলাটি হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এমন কোন ঘটনা এ এলাকায় ঘটেনি। মিথ্যা বলে লাভ কি,আমার কবরে অন্য কেউ যাবে না।

এছাড়া মামলায় উল্লেখিত এলাকায় বসবাসরত একমাত্র বাসীন্দা শাহীদা বেগম জানান, এখানে ২৫ আগষ্ট কোন মারামারি তো দুরের কথা কেউ আসেনি। সেদিন বৃষ্টি ছিল অনেক। এমন মামলা যারা করছে তাদের বিচার আল্লাহ করবে। এলেমপুর পঞ্চায়েত বাড়ি জামে মসজিদের ঈমাম মাওলানা মো. নেছার উদ্দিন বলেন, ওই শিক্ষকরা বাড়িতে আসলে এই মসজিদে নামাজ পড়েন। সেদিন তো ওনারা মসজিদে আসেননি। তাছাড়া ওদিন খুব বৃষ্টি ছিল। কিন্তু এখন যা শুনি এমন ঘটনা তো এখানে ঘটেনি। আর আমি এমন কিছু দেখিওনি। অপরদিকে মামলার বাদী ফারুকের বাবা মতিউর রহমান জানান, মারামারি হয়নি তবে কথা কাটাকাটি হয়েছে। আর চাঁদা দাবীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে চাননি। যা সংবাদকর্মীদের ক্যামেরায় ধারনকৃত ভিডিও রয়েছে।

স্কুল শিক্ষক ফোরকান বলেন, এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা তো দুরের কথা আমি সেদিন কলাপাড়ায নিজ বাসায় ছিলাম। কিন্তু ভাইয়ের ছেলে ফারুখ জমি দখল করার জন্য এই মিথ্যা চাঁদাবাজী মামলা দিয়েছে। আপনারা সাংবাদিক এবং পুলিশ ভাইয়েরা তদন্ত করে দ্যাখেন যে আদৌ এর কোন সত্যতা আছে কিনা।

কলাপাড়া থানার ওসি আলী আহম্মেদ জানান, বিজ্ঞ আদালত থেকে তদন্ত পূর্বক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমরা সত্যতা যাছাই করে রিপোর্ট দাখিল করবো।