পাবনার সুজানগরে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেন

পাবনার সুজানগর উপজেলার চিনাখড়া হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে একই সাথে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সুযোগ সুবিধা গ্রহণ, অবৈধভাবে নিয়োগসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরই সহকারী শিক্ষক শরিফুল ইসলাম অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, ১৯৭২ সালে চিনাখড়া হাই স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১০ইং সালে উচ্চ বিদ্যালয় হইতে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত উন্নতিকরণ হয়। পরবর্তীতে চিনাখড়া হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ পদে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে বেড়া মহিলা ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার প্রভাষক জাহাঙ্গীর হোসেন আবেদন করেন। এবং চিনাখড়া হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ পদে তিনি ২৮-০২-২০১৮ সালে নিয়োগ পান। কিন্তু অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেও তিনি পূর্ববর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়া মহিলা ফাজিল (ডিগ্রি) হতে প্রভাষক হিসেবে গত ১ আগস্ট ২০১৯ সাল পর্যন্ত বেতন-ভাতা উত্তোলন করাসহ সরকারি সকল ধরণের সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন।

চিনাখড়া হাই স্কুল এন্ড কলেজ শাখাটি ২০১৯ সালে এমপিওভুক্ত হয়। এদিকে জাহাঙ্গীর হোসেন অধ্যক্ষ পদে যোগদান করার পরও কলেজে না আসায় গভর্নিং বডি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ পদে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে পুনরায় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।

পত্রিকায় নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ দেখে ও প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হওয়ার খবর শুনে জাহাঙ্গীর হোসেন গভর্ণিং বডির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম শাহজাহানসহ অন্যান্য সদস্যদের ম্যানেজ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রেজুলেশন খাতায় বিগত তারিখ দেখিয়ে প্রায় দীর্ঘ ১৭ মাস পর ১৫ মে ২০১৯ইং যোগদান করেন। ১৫ মে ২০১৯ইং যোগদান করলেও অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেন শিক্ষক হাজিরা খাতায় বিগত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ইং তারিখের ঘর হতে বিগত সকল মাসের ১০নং ঘরে একই দিনেই স্বাক্ষর করেন যাহা লিপিবদ্ধ আছে।

অভিযোগকারী শিক্ষক শরিফুল ইসলাম জানান, জাহাঙ্গীর হোসেনের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ এর আবেদন, তার নিয়োগ, যোগদান, ছাড়পত্র সম্পূর্ণরূপে জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধভাবে করা হয়েছে।

অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি বেড়া মহিলা ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসা থেকে অবৈধভাবে যে বেতনভাতা উত্তোলন করেছিলাম তা ফেরত প্রদান করেছি।

এ বিষয়ে সুজানগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, একজন শিক্ষক কোনভাবেই একই সঙ্গে দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সুযোগ সুবিধা ভোগ করাসহ হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার সুযোগ নেই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রওশন আলী শনিবার (৫ মার্চ) জানান, তদন্তের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত চিনাখড়া হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের অনিয়ম ও জালিয়াতি করার ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।

উল্লেখ্য এর আগেও চিনাখড়া হাই স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে নিয়মনীতি না মেনে প্রতিষ্ঠানে কয়েকজন শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।