পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রথম ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতে নিহতদের স্মরণ করলো কাচলঙ – এর ছাত্র – যুব সমাজ

খাগড়াছড়ি—রাঙামাটি—বান্দরবান তিন পার্বত্য জেলা পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রথম ভ্রাতৃঘাতি সশস্ত্র সংঘাতে নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা করে কাচলঙ—এর প্রতিবাদী ছাত্র—যুব সমাজ।
রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রথম ভ্রাতৃঘাতি সশস্ত্র সংঘাতে নিহতদের স্মরণ করেছে কাচলঙ—এর প্রতিবাদী ছাত্র—যুব সমাজ।

শনিবার(১৭ই জুন ২০২৩) ‘কাচলঙ—এর প্রতিবাদী ছাত্র—যুব সমাজ’ ব্যানারে ৪০বছর আগে ১৯৮৩সালের ১৪ই জুন ও ১০ই নভেম্বর সংঘটিত ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতে নিহতদের স্মরণে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
‘আর নয় জাতীয় ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি, আসুন লড়াই জোরদার করি’ শ্লোগানে আয়োজিত স্মরণসভায় ম্যাকসিল চাকমার সভাপতিত্বে ও অবনিকা চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কলেজ ছাত্র ভূবান্তর চাকমা, জিকু চাকমা ও যুব সমাজের প্রতিনিধি শান্তি রঞ্জন চাকমা।

স্মরণসভা শুরুতে নিহতদের স্মরণে ১মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত জাতির জন্য এক অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে। সেই ৪০বছর আগে ’৮৩সালের ১৪ই জুন ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতে শান্তিবাহিনীর সামরিক প্রশিক্ষক বলি ওস্তাদসহ পরবর্তীতে একই বছর ১০ই নভেম্বর এমএন লারমার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে যে সশস্ত্র ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত শুরু হয়েছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে তা আজো চলমান রয়েছে। দীর্ঘ এই ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতে জাতির শত শত উদীয়মান তরুণ নেতৃত্বকে আমরা হারিয়েছি। কাজেই এই সংঘাতকে আর চলতে দেয়া যায় না।

তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে অতীতের ভুল ও ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে জাতির অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করতে হবে। অন্যথায় জাতির অস্তিত্ব ধ্বংসের মুখে পতিত হবে।

সভা থেকে তারা ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত জিইয়ে রেখে জাতিকে অধিকার বঞ্চিত রাখার ষড়যন্ত্র থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।

সভায় ‘ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের মূল হোতাদের মুখোশ খুলে দিন, লড়াই এগিয়ে নিন’, ‘ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত ও খুনের রাজনীতি বরদাস্ত করবো না’, ‘জাতীয় আন্দোলন বিপথে চালিত করতে দেবো না’ লেখা ফেস্টুন প্রদর্শন করা হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৮২—৮৩সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি তথা শান্তিবাহিনীর মধ্যে দলের অভ্যন্তরে মতবিরোধের জের ধরে লারমা গ্রুপ(লাম্বা) ও প্রীতি গ্রুপ(বাদি)—এ বিভক্ত হয় শান্তিবাহিনী। সন্তু লারমা জেল থেকে মুক্তির পর পূনরায় ফিল্ড কমান্ডারের দায়িত্ব গ্রহণ করলে এ বিরোধ সৃষ্টি হয়। ’৮৩সালের ১৪ই জুনে এই বিরোধ সশস্ত্র সংঘাতে রূপ নেয়। সেদিন লাম্বা গ্রুপের সশস্ত্র সদস্যরা বাদি গ্রুপের ওপর হামলা চালালে বলি ওস্তাদসহ ৩জন নিহত হন। এ ঘটনার জের ধরে পরবর্তীতে একই বছর ১০ই নভেম্বর বাদি গ্রুপের সশস্ত্র কমাণ্ডো টিম লাম্বা গ্রুপের সদর দপ্তরে হামলা চালায়। এতে এমএন লারমাসহ ৮জন নিহত হন।