সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে চেয়ারম্যানের ভাতিজা ইমরান ডিলারের চাল বিতরণে অনিয়ম

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে পোরজনা ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেশ কয়েকজন কার্ডধারী হতদরিদ্রদের নামে বরাদ্দকৃত চাল পোরজনা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বাবুর ভাতিজা ইমরান হোসেন দুই মাস যাবৎ আত্মসাৎ করে আসছেন বলে অভিযোগ করেছেন তারা।

জানা যায়, গত ফেব্রæয়ারি মাসে বেশ কিছু হতদরিদ্রের নাম পরিবর্তন করে যাদের নাম দেয়া হয় তাদের কার্ডের চাল ইমরান হোসেন কালোবাজারে বিক্রি করে দেন। পরবর্তীতে সুবিধাভোগীর তালিকায় নতুন নাম আসা কিছু কার্ডধারীরা প্রথম মার্চ মাসে কয়েকদিন চাল তুলতে গেলে আগামী মাসে আপনাদের চাল দেয়া হবে বলে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বিদায় করে দেন এবং এপ্রিল মাসেও একই কথা বলতে থাকে। আবার কিছু নতুন কার্ডধারীদের মার্চ মাসে চাল দেন কিন্তু এপ্রিল মাসে ছয় দিন আগেই প্রায় ১৫ জনকে চাল না দিয়েই হিসাব ক্লোজ করে দেন ডিলার ইমরান হোসেন।

গত বুধবার (২৭ এপ্রিল) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নতুন কার্ডধারীরা চাল না পেয়ে ফেরত যাচ্ছে। এসময় কার্ডধারীরা বলেন, আমরা প্রথম মাসে চাল পেয়েছি এখন দ্বিতীয় মাসে বলছে আপনারা আগামী মাসে চাল পাবেন চলে যান। এরপর কয়েকজনের নতুন কার্ডে প্রথম এবং চলতি দ্বিতীয় মাসে চাল না দিয়ে তাদের কার্ডগুলো আটকে রাখার চেষ্টা করে। একজন কার্ডধারী মহিলা কার্ড না রেখে আসতে চাইলে কার্ডটি টানানি করে ছিরে ফেলেন ইমরান হোসেন। পরে চাল না পেয়ে কষ্টের সাথে ছেড়া কার্ড নিয়ে বাড়ি ফিরে যান কার্ডধারী মহিলা লিলি ঝর্না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রæতি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাচড়া গ্রামের মোঃ ইমরান হোসেনকে ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বাবুর ভাতিজা হওয়ার সুবাদে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুবিধাভোগীদের মূল তালিকায় ৭৭৯ নম্বরে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাচড়া গ্রামের শামছুল আকন্দের স্ত্রী রোজিনা খাতুন, একই গ্রামের ১০৮৩ নম্বরে নবী নেওয়াজের পুত্র সাইফুল ইসলাম, জোতপাড়া গ্রামের ৬৩৫ নম্বরে শহিদ আলীর স্ত্রী রোজিনা খাতুন, জিগারবাড়িয়া গ্রামের এলিনা খাতুন, ১নং ওয়ার্ডের ছোট মহারাজপুর গ্রামের মদন মোহনের স্ত্রী লিলি ঝর্নাসহ আরও অনেকের নাম রয়েছে। কিন্তু এরা কেউ চাল পায়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে ডিলার ইমরান হোসেন বলেন, যাদের কার্ড আছে তাদেরই চাল দিয়েছি। যারা চাল নিতে আসেনি তাদের চাল অন্য অসহায় লোকদের দেয়া হয়েছে এবং খাদ্য অফিসারের সাথে কথা বলে হিসাব ক্লোজ করা হয়েছে।

উপজেলা খাদ্য অফিসার বলেন, আমার কাছে মাস শেষ হওয়ার আগেই বিতরণ সম্পন্ন তালিকা জমা দেন। যার ফলে চাল বিতরণের হিসাব ক্লোজ করে দিয়েছি। তবে কার্ডধারীরা যদি চাল না পেয়ে থাকেন সেটা খতিয়ে দেখে ডিলারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে পোরজনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেন বাবু বলেন, আমার জানামতে কার্ডধারীদের চাল দেয়া হয়েছে। আর যারা চাল নিতে আসেনি তাদের চাল অন্য অসহায় লোকদের দেয়া হয়েছে।