সিরাজগঞ্জের বেলকুচির রবিউলের হেলিকপ্টার রাস্তায় চলে, স্বপ্ন আকাশে উড়ানোর

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার আদাচাকি গ্রামের ক্বারি রবিউল ইসলাম তালুকদারের তৈরি হেলিকপ্টার রাস্তায় চলে আকাশে উড়ে না, তার স্বপ্ন আকাশে উড়ানো।

৬৩ বছর বয়সী রবিউল তার তৈরি হেলিকপ্টার দেখতে দুর দুরান্ত থেকে মাুনষ দেখতে আসেন প্রতিনিয়ত। তিনি দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টায় একটি হেলিকপ্টার তৈরি করেছেন। তার হেলিকপ্টারে প্রাণ ফিরে পায়নি এখনও। তার হেলিকপ্টার গ্রামের রাস্তায় চলাচল করে কিন্তু আকাশে উড়াতে পারেনি, তার স্বপ্ন এখন আকাশে উড়ানো।

পেশায় তিনি মসজিদের ইমাম। তার আর্থিক অনটন লেগেই থাকে, তবু তিনি চেষ্টা করছেন তার হেলিকপ্টার যেন আকাশে উড়ে। সেই লক্ষেই তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। তার হেলিকপ্টার আকাশে উড্ডয়নের সখ দীর্ঘদিনের, কিন্ত সাধ আছে সাধ্য নাই। তিনি হেলিকপ্টারের মূল স্টাকচার তৈরি করেছেন।

তিনি আপাতত হেলিকপ্টারের সামনে এবং পিছনে চাকা লাগিয়ে রাস্তায় ব্যাটারি দিয়ে চালান। তার হেলিকপ্টার যখন রাস্তা দিয়ে চলে তখন উৎসুক জনতা ভীড় জমায়।

তবে তিনি পেশায় ইমাম হলেও ছোটবেলা থেকেই টেকনিক্যাল মোনা মানুষ। আর্থিকভাবে তিনি সচ্ছল নন। যদি কোন আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা পায় তাহলে হয়তো ক্বারি রবিউলের হেলিকপ্টার সত্যি আকাশে উড়াতে পারবে এমনটাই ধারণা তার। আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তার হেলিকপ্টার আকাশে উড্ডয়ন হবে।

রবিউলের হেলিকপ্টারটি প্রায় দশ ফিট লম্বা এবং একজন মানুষ চালক হিসেবে ভিতরে বসা যায়। তার হেলিকপ্টারে বিশাল দুটি পাখা এলোমেনিয়াম শীট দিয়ে তৈরি করেছেন। হেলিকপ্টারের সামনের অংশে প্লাস্টিক ব্যবহার করেছেন এবং পিছনে লোহা দিয়ে তৈরি। তার হেলিকপ্টারে লাইটিং করা হয়েছে।

যখন ষ্টার্ট করেন তখন পুরো হেলিকপ্টারের মতই শব্দ হয়। তিনি মূল হেলিকপ্টার তৈরি করেছেন কিন্তু এখনো প্রাণ তিতে পারেনি। তার বিশ্বাস একদিন আমার হেলিকপ্টারও প্রাণ ফিরে পাবে।

এব্যাপারে স্থানীয়রা জানান, ক্কারি রবিউল ইসলাম মসজিদে ইমামতি করলেও তিনি টেকনিক্যাল মোনা মানুষ। পূর্বে থেকেই তিনি ভিন্ন কিছু তৈরি করার চেষ্টা করেন। তিনি সচ্ছল না হওয়ায় তার বিভিন্ন সময়ের আবিষ্কারের প্রচেষ্টা সফল করতে পারেনি। আমাদের বিশ্বাস তাকে যদি সবকিছুর সঠিক যোগান দেয়া যায় তাহলে হয়তো তার দ্বারা অনেক কিছুই তৈরি করা সম্ভব।

তার হেলিকপ্টার দেখতে মানুষ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসে। তার হেলিকপ্টারটি আমাদের গ্রামের রাস্তা দিয়ে চলাচল করে, তিনি আপাতত ব্যাটারি দিয়ে তার হেলিকপ্টার চালান। তার হেলিকপ্টার বাহিরে বেড় করলে উৎসুক জনতা হেলিকপ্টার দেখতে ভীড় জমায়। তাকে আর্থিক এবং সঠিক গাইড লাইন পেলে হয়তো তার হেলিকপ্টার আকাশে উড্ডয়ন সম্ভব এবং তার দ্বারা অনেক কিছুই আবিষ্কার করা যাবে এমনটাই ধারণা স্থানীয়দের।

এব্যাপারে সরেজমিনে গিয়ে ক্বারি রবিউল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় হেলিকপ্টারের মূল বডি তৈরি করেছি। সামনের অংশে প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়েছে এবং পিছনের টুকু লোহা দিয়ে তৈরি। আমার হেলিকপ্টারটি আকাশে উড্ডয়নের পরিকল্পনা আছে। তবে আমি অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে আমার তৈরি হেলিকপ্টারের যন্ত্রাংশ ক্রয় করতে পারছি না।

আমার এটা তৈরি করতে প্রায় ষাট হাজার টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। তবে আমার এইক্ষুদ্র প্রচেষ্টা যদি সরকার অনুমতি দেয় এবং আর্থিকভাবে কোন মাধ্যমে পৃষ্ঠপোষকতা পাই তাহলে হয়তো আমার তৈরি হেলিকপ্টারটি একদিন আকাশে উড়াতে পারবো।

আমি এটি প্রাথমিক ভাবে তৈরি করেছি। আরও উন্নত ধাতপ পদার্থ ও আধুনিক যন্ত্রাংশ ব্যবহার করবো যদি আমি অর্থনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা পাই। আমি ইমামতি করি আমার অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না। আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে হয়তো আমার আবিষ্কার এবং পরিকল্পনা গুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

ক্বারি রবিউলের উদ্ভাবনী চিন্তাধারার বাস্তবিক রুপ দিতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও দরকার আর্থিকভাবে সচ্ছলতা। তাহলেই হয়তো তার হেলিকপ্টার আকাশে উড্ডয়ন করতে বাস্তবিক রুপ দেয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।