গুলির আওয়াজে মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে

সিলেটের বিশ্বনাথের মৌলভীরগাও গ্রামে পুরুষ শুন্য

সিলেটের বিশ্বনাথে গুলি করে আতংক ছড়িয়ে লন্ডন প্রবাসীর গেট ভাঙার পর আজ ১০ দিন ধরে প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই গুলির শব্দে জনশুন্য হয়ে পড়েছে গ্রামটি। একাধিক রাউন্ড গুলির শব্দে নারী ও শিশু কিশোররা আতঙ্কে দিনযাপন করছেন। ঘটনাটি ঘটেছে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের মৌলভীরগাও গ্রামে।

গত ২২ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে গ্রামের পুরুষ শূন্য ও আতংক বিরাজ করছে। রবিবার (১লা অক্টোবর) দুপুরে গ্রামবাসির পক্ষে বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আরিফ হাসান নামে এক শিক্ষার্থীর এমন অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তেব্যে বলা হয়, গত ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার একই গ্রামের তুফায়েল, সাব্বির, আবুল হোসেন, সাইকুল, সাজিদুল, মানিক, খালেদ, সিরাজ ও সাজ্জাদের নেতৃত্বে প্রায় দুই শতাধিক সন্ত্রাসী বন্দুকসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র নিয়ে গ্রামটি ঘেরাও করে যুক্তরাজ্য প্রবাসি লেবু মিয়ার চাচাত ভাই শায়েস্তা মিয়া, জয়নাল আবেদীন, রাহেদ ও লায়েকসহ কয়েকজনকে হত্যার জন্য খুজতে থাকে এবং তারা ২০/২৫ রাউন্ড গুলি করে গ্রামে আতঙ্ক সৃস্টি করে। এক পর্যায়ে লেবু মিয়ার বাড়ির রাস্তায় নির্মাণাধীন গেইট ভাঙতে শুরু করলে একাধিকবার থানা পুলিশকে জানালে কয়েক ঘন্টা পর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তখন গ্রামবাসি অস্ত্রধারীদেরকে দেখিয়ে দিলেও তাদের গ্রেফতার করেনি পুলিশ। ঘটনার পরদিন শনি ও রবিবার পুলিশ পাহারায় থাকলেও অস্ত্রধারী ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা গ্রামে অবস্থান করছিল। কিন্তু পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেনি। এ ঘটনায় জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে সিলেট আদালতে একটি মামলা(৪৫/২৩ইং) দায়ের করলে এখন পর্যন্ত কোন অস্ত্র উদ্ধার বা আসামি গ্রেফতার হয়নি।

মামলা পর সন্ত্রাসীদের পক্ষে সাইকুল ইসলাম গ্রামের ৩০ জনকে আসামি করে সম্পুন্ন মিথ্যা সাজানো একটি মামলা দায়ের করে। এ মামলা থেকে গ্রামবাসিকে অব্যাহতি, বাদির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন, আসামিদের গ্রেফতার এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

অভিযোগে বলা হয়, ২০২২ সালের নভেম্বরে যুক্তরাজ্য প্রবাসি মিয়াজান আলী গ্রামবাসিকে নিয়ে এক বৈঠকে প্রবাসি লেবু মিয়ারা লোকজনদের উপর দিয়ে জামাল মানি দের লোকজনের রাস্তার জন্য জায়গা নিতে অনুরোধ করলে লেবু মিয়া নিজের জমির উপর দিয়ে রাস্তা দেয়ার সম্মতি দেন। তখন লেবু মিয়ার জায়গায় একটি গেইট নির্মাণের কথা বললে জামালের লোকজনের কোন আপত্তি ছিলনা।

কিন্তু গেইট নির্মাণের পর কতিপয় অসৎ ব্যক্তিদের প্ররোচনায় গেইট জোরপূর্বক ভেঙ্গে প্রবাসি লেব মিয়াগংদের বাড়ির জমি দখলের চেষ্টার কারন। পুলিশ একাধিক অভিযোগ পেয়ে তৎকালিন বিশ্বনাথ থানার ওসি গাজি আতাউর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে গেইটের স্থান পরিদর্শন করে লেবু মিয়ার কাগজ পত্রে দেখা যায়, নির্মিত গেইটের চতুরদিকে তাদের নিজস্ব জমি রয়েছে এবং গেইটে কারো কোন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। এনিয়ে একাধিকবার থানায় বৈঠকের পর পুলিশের একজন উর্ধতন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে লিখিতভাবে নিস্পত্তি করা হয়। কিন্তু সাবেক ওসি বদলি হওয়ার পরই সেই গেইটি ভেঙে দেয়া হয়। বর্তমানে এ গ্রামে যে কোন সময় খুন খারাবির মতঘটনা ঘটতে পারে এবং গ্রামে থম থমে অবস্থা বিরাজ করছে।

লিখিত বক্তব্য আরো বলা হয় সাইকিল গ্রামবাসীকে আসামি করে সাজানে মিথ্যা মামলা দায়ের পর মৌলভী গাও গ্রামের মানুষ পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে। বন্দুকের গুলির আওয়াজে নারী শিশুরা চরম আতঙ্ক রাত্রি যাপন করছে। আমরা নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সাইকুলের দায়ের করা মামলার সকল নিরীহ কে মামমলা থেকে অব্যাহতি ও অস্ত্র উদ্ধার, আসামীদের গ্রেফতারের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির নিকট জোর দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, দেলোওয়ার হোসেন, জাহারানা বেগম, সুজিনা বেগম, আম্বিয়া বেগম, পিয়ারা বেগম, হুসনা বেগম, আজিজুররহমান, রাশিদা বেগম ও লিপি বেগম প্রমুখ।