জুয়ায় বাজি স্ত্রী : হারের পর ধর্ষণ

ভারতের ওড়িষ্যা রাজ্যের এক বাসিন্দা বন্ধুর সঙ্গে জুয়া খেলতে নেমেছিলেন স্ত্রীকে বাজি রেখে। সেই জুয়া খেলতে গিয়ে হেরে যান তিনি। আর খেলার শর্ত হিসাবে স্ত্রীকে তুলে দেন জয়ী ব্যক্তির হাতে। সেই ব্যক্তি পরাজিতের স্ত্রীকে ধর্ষণও করেন বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

ঘটনাটি গত সপ্তাহে ঘটেছে। নির্যাতিতার স্বামী এবং ধর্ষণে অভিযুক্ত – দুজনেই বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। এ ঘটনার জন্য নির্যাতনের শিকার ওই নারী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগী নারী বালেশ্বর জেলার বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, তার স্বামী জুয়া খেলায় হেরে গিয়ে স্ত্রীকে তুলে দিয়েছিলেন জুয়াতে জয়ী ব্যক্তির কাছে। গ্রামের বাইরে নিয়ে গিয়ে সেই ব্যক্তি ধর্ষণও করে ওই নারীকে।

নির্যাতিতা নারী বিবিসিকে টেলিফোনে জানান, ‘সেদিন রাত ১১টা নাগাদ স্বামী বাড়িতে ফেরে। বলে তার সঙ্গে যেতে হবে। অত রাতে কোথায় যেতে হবে, বাচ্চারা ঘুমোচ্ছে – এসব বলেছিলাম আমি। কিন্তু স্বামী শোনে নি। কোনও জবাব না দিয়ে একরকম জোর করেই নিয়ে যায় গ্রামের বাইরে। সেখানে তার এক বন্ধু আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল। সেই ব্যক্তিকে স্বামীর বন্ধু হিসেবে আমি তাকে ভাই বলে সম্বোধন করি। এক পর্যায়ে ওই ব্যক্তি হাত ধরে টানাটানি শুরু করেন। এ সময় আমি অনেক মিনেতি করেছিলাম।’

শেষে তার স্বামীই ওই ব্যক্তির হাতে জোর করে তুলে দেয়। তারপরে স্বামীর সামনেই তাকে ধর্ষণ করে ওই ব্যক্তি, জানাচ্ছিলেন ওই নির্যাতিতা। তিনি তখনও জানতেন না যে তাকে বাজি ধরে জুয়া খেলতে বসেছিলেন স্বামী এবং তিনি পরাজিত হওয়ায় তাকে ধর্ষিতা হতে হল।

পরের দিন ওই নারী ঘটনাটি তার বাবাকে জানান। তিনি ওই নারীর শ্বশুরবাড়িতে এসে সবার কাছে ঘটনার সত্যতা জানতে চান। কেউই স্বীকার করেন নি। গ্রামের মাতব্বররাও জানত না বিষয়টি। শেষে মেয়ে আর তার সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান তার বাবা।

ওই নারী আরও বলেন, থানায় গিয়েছিলাম অভিযোগ জানাতে। সঙ্গে বাবাও ছিলেন। কিন্তু অভিযোগ না নিয়ে মিটমাট করে নিতে পরামর্শ দেন পুলিশ।

তবে বালিয়াপুল থানার অফিসার ইনচার্জ শ্যামসাগর পান্ডা অবশ্য অভিযোগ না নেয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘আমি দিন দুয়েক ছুটিতে ছিলাম। ফিরে এসেই ঘটনা জানতে পারি। তারপরেই ওই নারীর অভিযোগ লিপিবদ্ধ করা হয়। তাকে মেডিকেল টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে। আর তার স্বামী এবং জুয়া খেলায় জয়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

নির্যাতিত নারীর বাবা বিবিসিকে বলেন, ‘পুলিশ সুপারের আদেশের পরেই মামলা নেয়া হয়েছে। আর তারপরেও এমন ভাবে আমার মেয়েকে জেরা করা হচ্ছে, নানা অস্বস্তিকর প্রশ্ন করা হচ্ছে, যেন মনে হচ্ছে তার স্বামী নয় আমার মেয়েই অপরাধী।’

সূত্র: বিবিসি বাংলা