৭কেজি হেরোইনের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে! লাদেন সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি পরিবারের
গত বুধবার দিবাগত রাতে র্যাব ও বিজিবির যৌথ অভিযানে আটক হওয়া শফিকুল ইসলাম লাদেনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে অভিযুক্ত ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বেলা আড়াইটার দিকে জেলা শহরের একটি হোটেলে পরিবারের সদস্যরা এই সংবাদ সম্মেলন করে। তারা জানান, তারাবীর নামাজ পড়ে বের হওয়ার মাত্রই মসজিদের সামনে থেকে আটক করে শফিকুল ইসলাম লাদেনকে। এরপর তাকে সাথে নিয়ে বাড়িতে তল্লাশী চালায় র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটলিয়ন র্যাব ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির যৌথ অভিযানিক দল। বাড়িতে কিছু না পেলেও পাশের বাড়ির পেছনের পরিত্যক্ত জায়গা থেকে ৭ কেজি হেরোইন উদ্বারের দাবি করে র্যাব। লাদেনকে ফাঁসাতেই স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে এমন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছে।
সংবাদ সম্মেলনে আটক শফিকুল ইসলাম লাদেনের ছোট ভাই মিনারুল ইসলাম বলেন, আমি ও আমার ভাই একসাথে মসজিদে নামাজ আদায় করছিলাম। আমার ভাই নামাজ শেষ করে বের হওয়া মাত্রই তাকে আটক করে র্যাবের সদস্যরা। পরে বাড়িতেও তাকে নিয়ে তল্লাশি করে আটক করে কিছুই পায়নি। পাশের বাড়ির পেছনের পরিত্যক্ত জায়গায় হেরোইন উদ্বার করে আমার ভাইকে ফাঁসানো হচ্ছে। স্থানীয় কিছু মাদক ব্যবসায়ী বারবার এভাবে আমার ভাইকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছে। অথচ এখন পর্যন্ত কোনদিন তাকে কোন প্রকার মাদকসহ আটক করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
লাদেনের বোন সাগরী বেগম জানান, আমার ভাই একজন সহজ সরল প্রকৃতির মানুষ। দিনমজুর ও কৃষি কাজ করে সংসার পরিচালনা করে। অথচ তাকে ৭ কেজি হেরোইন দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। আটকের সময় মসজিদের মুসল্লী ও স্থানীয় বাসিন্দা মিলে প্রায় দুইশ লোক জমা হয়। কিন্তু র্যাবের লোকজন কারো কথা শুনেনি। অনেকদিন আগে আমার এক ফুফাতো ভাই র্যাবের সোর্সের কাজ করতো। সে সময় সে বেশকিছু অনিয়ম করে। তারই সূত্র ধরে আমাদের পরিবারের উপর এমন মিথ্যা মামলা করে ফাঁসানো হচ্ছে।
আরেক ছোট বোন নাজিরা খাতুন বলেন, আমার ভাইকে যে পরিমান হেরোইনসহ আটক করা হয়েছে, তার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭ কোটি টাকা। এতো টাকার মালিক অথচ খড়ের বাড়িতে বসবাস করে আমার ভাইয়ের পরিবার। আমার ভাই কোনদিন পাবনা দেখেনি, অথচ সেখানেও তার নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ আমরা চাই বিষয়টির সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, আটক শফিকুল ইসলাম লাদেনের মেয়ে সারমিন খাতুনসহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে র্যাব-৫, সিপিসি-১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে ৭ কেজি ১৩০ গ্রাম হেরোইনসহ আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে সংবাদ সম্মেলন করেন, র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিয়াজ শাহরিয়ার।
এসময় র্যাব অধিনায়ক জানান, সীমান্তে ভারত থেকে আসা হেরোইন আমদানির মূলহোতা শফিকুল ইসলাম লাদেন। এর আগে র্যাব তিনবার অভিযান পরিচালনা করেও তাকে আটক করা যায়নি। সীমান্ত এলাকা হওয়ায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ৫৩ বিজিবি ব্যাটলিয়নের সাথে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-৫, সিপিসি-১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের একটি অপারেশন দল। এসময় তার বসতবাড়ির টয়লেটের ট্যাংকের পিছনে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে রাখা অবস্থায় ৭ কেজি ১৩০ গ্রাম হেরোইনসহ আটক করা হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন