খাগড়াছড়ির রামগড়ে পানিতে ডুবে প্রান হারালো দুই শিশু

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় উপজেলায় পরিত্যক্ত ডোবার পানি পুকুরে ডুবে ভাই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড ফেনীর কুল গ্রামে এ দূর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হল সোনাইপুল বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী পল্লী চিকিৎসক ডাক্তার মো.আবু তৈয়বের বড় মেয়ে মাহিষা বিনতে মিফতা (৫), রামগড় পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের ফেনীর কুল এলাকার দুবাই প্রবাসী মাওলানা মো.আবু তাহেরের বড় ছেলে মো. জুনায়েদ হোসেন (৪)।
দুই শিশু সম্পর্কে চাচাতো ভাই-বোন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বিকালে বাড়িতে দুই ভাই-বোন খেলা করছিল। হঠাৎ করে তাঁরা দুজন কখন বাড়ির পাশে পুকুরে সবার অজান্তে পানিতে ডুবে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পুকুরের নিচ থেকে একজনের মরদেহ ভেঁসে উঠে পরে পুকুর থেকে বাকি শিশুটির লাশও উদ্ধার করা হয়। আত্মীয়দের একসংঙ্গে দুই শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছাঁয়া নেমে এসেছে।

স্থানীয়রা জানায়, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রতিদিনের মতই শিশুরা বাড়ির আঙ্গিনায় খেলাধুলা করছিল। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেও জুনাইদ ও মিতা ঘরে না আসায় স্বজনরা খোঁজাখুঁজি শুরু করে। এক পর্যায়ে প্রবাসি আবু তাহেরের বাসা সংলগ্ন নিজস্ব ডোবায় খুঁজতে গেলে ভাসমান অবস্থায় জোনাইদকে পাওয়া যায়। তাকে উদ্ধারের পর ঐ ডোবার পানিতে নেমে মিতার সন্ধান শুরু করে স্বজনরা। অনেক খোঁজার পর ডুবন্ত অবস্থায় মিতাকেও উদ্ধার করা হয়।’

পরে স্থানীয় চিকিৎসক এসে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘নিহত জুনাইদ ও মিতার পিতা আপন ভাই। তাদের বাসাও পাশাপাশি। ধারণা করা হচ্ছে সন্ধ্যা ৬টা হতে সাড়ে ৬টার মধ্যে ডোবার পানিতে পরে তারা মারা যায়।’

নিহত জুনাইদের বাবা ডাক্তার আবু তৈয়ব বলেন, ‘দীর্ঘদিন নানার বাড়িতে বেড়িয়ে বুধবার (৯ জুন) তার ছেলেটা ফিরেছিল।’

তিনি বলেন, ‘প্রবাসি ছোট ভাই আবু তাহের বাড়ি নির্মাণের জন্য পাশেই মাটি কাটায় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। পরে বৃষ্টির পানি জমে এটি ডোবায় পরিণত হয়। গত ক’দিনের বৃষ্টিতে ডোবাটি কানায় কানায় পানি পূর্ণ ছিল। এ ডোবায়ই তার কন্যা ও ভাতিজা খেলতে গিয়ে জলে ডুবে মারা যায়।’

এদিকে, ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত রাজিব চন্দ্র কর বলেন, ‘এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে রামগড় থানার ওসি (তদন্ত) রাজিব করের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। জলে ডুবে নিহত দুই শিশুর অভিভাবক ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ ময়না তদন্ত ছাড়া স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

এদিকে, দুই শিশুর এ অনাকাংখিত মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া অব্যাহত রয়েছে।