খাগড়াছড়ি লংগদুতে সেটেলার কর্তৃক এক পাহাড়ি স্কুলছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ, উদ্ধার হয়নি

পার্বত্য জেলার রাঙামাটির লংগদুতে সেটেলার কর্তৃক এক পাহাড়ি স্কুলছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ করেছে পরিবার। এতে ৭দিনেও উদ্ধার হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। লংগদু উপজেলার লংগদু সদর ইউনিয়নের মহাজন পাড়া থেকে সেটলার বাঙালি কর্তৃক ১০ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক পাহাড়ি স্কুল ছাত্রী অপহৃত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত ২৩শে মার্চ ২০২৩ মো: সাকিব হোসেন মান্না(২১) নামে মাইনিমুখ এলাকার এক সেটলার যুবক ও তার সহযোগীরা নিজ বাড়ি থেকে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করেছে বলে অভিযোগে জানা গেছে। ঘটনার ৭দিন পার হলেও সেটলার বাঙালিদের কবল থেকে ওই ছাত্রীকে এখনো উদ্ধার করা যায়নি বলে পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন।

ঘটনার পর ২৬শে মার্চ অপহৃত ছাত্রীর মা ১৩জনের বিরুদ্ধে লংগদু থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তবে থানা কর্তৃপক্ষ তার অভিযোগটি মামলা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেনি বলে জানা গেছে।

অভিযুক্তরা হলেন-৬নং মাইনিমুখ ইউনিয়নের সোনাই(ইসলামাবাদ) এলাকার ১. মো: সাকিব হোসেন মান্না(২১), পিতা-মো: জামাল উদ্দিন; ২. মো: জামাল উদ্দিন(৫০), পিতা-মৃত তায়েব আলী; ৩. মোছা. সালমা বেগম(৪৫), স্বামী-মো: জালাল উদ্দিন; ৪. মো: শামীম হোসেন(২৮), পিতা-মো: জামাল উদ্দিন; ৫. মো: শাকিল হোসেন(২৫), পিতা-মো: জামাল উদ্দিন; ৬. মো: শাহ আলী(২৮), পিতা-আকুবর আলী ৭. মো: ছরোয়ার(৩৮), পিতা-মৃত মুক্তার আলী; ৮. মো: আজিজুল (৩২), পিতা-আব্দুল মালেক; ৯. মো: রেজাউল (৩৫), পিতা-আব্দুল বারেক; ১০. মো: আলতাব খাঁ(৬০), পিতা-অজ্ঞাত; ১১. মো: জামাল উদ্দিন (৩৯), পিতা-অজ্ঞাত; ১২. মো: কামাল(৩৬), পিতা-অজ্ঞাত ও ১৩. মোছা. কাজলী বেগম(৩০), পিতা-মো: জামাল উদ্দিন, বর্তমান ঠিকানা- ঢাকা।

অভিযোগে বিবরনে জানা গেছে, গত ২৩শে মার্চ ভোর রাতের দিকে মো: সাকিব হোসেন মান্না তার কয়েকজন সহযোগীকে সাথে নিয়ে লংগদু সদর ইউনিয়নের মহাজন পাড়ার নিজ বাড়ি থেকে ওই স্কুল ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যায়। ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিযে সাকিব হোসেন মান্না তার মেয়েকে অপহরণ করেছে।

পরে স্থানীয় মুরুব্বী ও ছাত্রীর পরিবার অভিযুক্ত সাকিব হোসেনের অভিভাবক ও আত্মীয়-স্বজনকে চাপ সৃষ্টি করলে তারা মামলা না করার শর্তে ৪৮ঘন্টার মধ্যে ওই ছাত্রীকে পরিবারের নিকট বুঝিয়ে দেয়ার কথা বলেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ছাত্রীকে পরিবারের নিকট হস্তান্তর না করে অভিযুক্তের পরিবারবর্গ মো: সাকিব হোসেন ও ওই ছাত্রীকে অন্যত্র সরিয়ে রেখে তাদের ছেলে সাকিব হোসেন-এর সাথে ওই ছাত্রীর বিয়ে দেয়ার প্রস্তাব পাঠায়।
এখন অপহরণকারী ও তার আত্মীয়-স্বজনরা ওই ছাত্রীর মাকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ছাত্রীর মা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও থানা কর্তৃপক্ষ তার অভিযোগটি মামলা হিসেবে তালিকাভূক্ত করেনি এবং পুলিশ ছাত্রীকে উদ্ধারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে অপহরণের ৭দিন পার হলেও ওই ছাত্রীকে এখনো উদ্ধার করা যায়নি বলে পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন।

অপহৃত ছাত্রীর পরিবারের লোকজন অবিলম্বে সেটলার বাঙালিদের হেফাজত থেকে ছাত্রীকে উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন।

লংগদু থানার অফিসার্স ইনচার্জ(ওসি) মোহাম্মদ ইকবাল উদ্দিন ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে বলেন এলাকা শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখা স্বার্থে সুষ্ঠ তদন্ত করে বিহিত ব্যবস্থা গ্রহন করবে।