পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বড় ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে আপন বড় ভাই সোহাগ হাওলাদারের (৪২) ছুরিকাঘাতে খুন হয় সাংবাদিক আবু জাফর প্রদীপ।

ছুরিকাঘাতের পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ছোট ভাইকে পুকুরে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যান খুনি বড় ভাই সোহাগ। তবে ৫দিন পলাতক থাকলেও ১১ জুন সোহাগকে ঢাকা থেকে গ্রেফতারের পর বেড়িয়ে আসে এ হত্যাকান্ডের মূল রহস্য। সোমবার দুপুরে এসব তথ্য জানান কলাপাড়া থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন।

এ ঘটনায় গত ০৬ জুন প্রদীপের স্ত্রী জিনিয়া আক্তার বাদী হয়ে সোহাগকে প্রধান আসামী করে অজ্ঞাত নামা ৫/৬ জনের নামে কলাপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আটকের পর আজ দুপুরে সোহাগকে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।

ওসি আরো জানান, সোহাগকে ঢাকা থেকে গ্রেফতারের পর আমরা তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সোহাগ জানায়, ৫ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে সাংবাদিক আবু জাফর প্রদীপ সবচেয়ে ছোট। প্রদীপ বাড়িতে থাকতো এবং পৈত্রিক সম্পত্তি দেখাশোনা এবং ভোগ করতো। তাদের সকল বোনের বিবাহ হয়ে গেছে এবং বাকি ভাইরা পেশাগত কারনে সবাই বাহিরে থাকতো। পৈত্রিক ভিটামাটি নিয়ে প্রদীপের সঙ্গে সোহাগের দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো।

প্রদীপ হত্যাকান্ডের বেশ কয়েকদিন আগে সোহাগ পার্শ্ববর্তী আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের এক আত্মীয়ের বাড়িতে আবস্থান নেন। পরে ০৫ জুন সন্ধ্যায় সোহাগ আমতলী বাজারে এসে ৮০ টাকা দিকে একটি চাকু ক্রয় করেন। সন্ধ্যায় চাকুটি পেপার দিয়ে মুড়িয়ে প্যান্টের পিছনে রেখে বাড়িতে আসেন। রাত নয়টার দিকে বাড়ির জমিজমা নিয়ে দুই ভাইরে মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। বাকবিতন্ডায় এক পর্যায়ের তারা পুকুর পাড়ে চলেন আসেন। এসময় সোহাগের সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে প্রদীপের পেটের ডান পাশে এবং ডান হাতের কবজির উপরে আঘাত করে পুকুরে ফেলে দেয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করে তিনি পালিয়ে যান। এঘটনার পর ওইদন দিবাগত রাত দুইটার দিকে পুকুর থেকে প্রদীপের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সোহাগকে গ্রেফতারে ব্যাপক তৎপরতা চালায় পুলিশ।

প্রদীপকে খুন করার পর সোহাগ প্রথমে চাঁদপুর, পরে লক্ষীপুর ও কুমিল্লা হয়ে ঢাকার উত্তরায় আত্মগোপন করে। এ ঘটনার ৬ দিন পর ১১ জুন বিকেলে ঢাকার উত্তরা থেকে সোহাগকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।