পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে উপকূলজুড়ে তেল ফসলের বাম্পার ফলন

দীর্ঘ দুই বছরজুড়ে করোনার যাতাকলে বৈশ্বিক বাজারে দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি। যার প্রভাবে দেশের বাজারেও ভোজ্য তেলের দাম লাগামহীন। ফলে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিকল্প ধারায় ঝুকেছে কৃষি বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় তেল বীজ সহিষ্ণু জমিতে এর চাষ এবং সম্প্রসারন ঘটাতে কৃষাণ কৃষাণিদের উদ্বুদ্ধ করছেন কর্মকর্তারা। ফলে চাষীদের হাতে বিনামূলে তুলে দেয়া হচ্ছে তেল জাতীয় বীজ এবং সার। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে ফসলের গুনাগত মান নির্ণয়ে কৃষি বিভাগের উদ্যোগে করা হচ্ছে সঠিক পরিচর্যা।

পটুয়াখালীর সমুদ্র উপকূলীয় উপজেলা কলাপাড়ায় এবছর মাঠে মাঠে বাহারি হলুদ ফুলের সমারহ। কৃষি বিভাগের প্রচেষ্টায় এই উপজেলায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন হয়েছে।  বর্তমানে এসব ক্ষেতে থোকায় থোকায় ঝুলছে প্রায় পরিপক্ক তেল ফসল বা সূর্যমুখি বীজ। ফলে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখেও।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার টিয়াখালী ইউপির পশ্চিম রজপাড়া গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সূর্যমূখির আবাদ করেছেন চাষীরা। এর মধ্যে সিক্সলেন সড়কের পাশে ১০ একর জমিতে সূর্যমূখি চাষে দৃষ্টিনন্দন এক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। যা দেখতে প্রতিদিন ভীড় করছেন প্রকৃতি প্রেমীরা। বিশাল এই ভূমিতে কৃষিবিভাগের প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যের সার ও হাইসান জাতের বীজ বিতরণেই সাচ্ছন্দে ফসল ফলিয়েছেন ১০ জন প্রান্তিক চাষিরা।

এদেরই একজন কৃষাণী জেসমিন জানান,উপজেলা কৃষি বিভাগ বিনামূল্যে আমাকে সার এবং সূর্যমুখির বীজ দিয়েছে। আমার ফলন খুব ভালো হয়েছে। চাষি শাহ-আলম বলেন,  সরকার আমাদের আগামী মৌসুমে ফের যদি ফ্রী সার এবং বীজ দেয় এর তিনগুন জমিতে আবাদ করার ইচ্ছে রয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ জানান, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে উপজেলায় ৬ শত কৃষাণ,কৃষাণীদের মাঝে বিনামূল্যে সার এবং বীজ বিতরণ করা হয়েছে। পরিবেশ অনুকূলে থাকায় এদের সবাই শতভাগ সফল হয়েছেন। তিনি বলেন, আগামী বছর সরকারী ভাবে বিনামূল্যে সার,বীজ বিতরণ করা হলে আশাকরি আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। সেই লক্ষ্যে ইতোমধ্যে চাষিদের তেল জাতীয় ফসল চাষে উব্দুদ্ধ করতে আমরা সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে একজন কৃষক যেন তার চাল,ডালের পাশাপাশি নিজ ক্ষেতেই তেল ফসলও উৎপাদন করে।