পাবনায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী মাড়মিদের ‘মালতো’ ভাষা বিলুপ্তির পথে

পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ইউনিয়নের মাড়মি নৃ-গোষ্ঠী বাঙালিদের সঙ্গে বাংলায় কথা বললেও একসময় নিজেদের সম্প্রদায় ও গোত্রের মধ্যে ‘মালতো’ ভাষায় কথা বলতেন। দুঃখজনক হলেও সত্যি, নৃ-গোষ্ঠী পল্লীর মাড়মি গ্রামের শিশুদের অনেকেই বর্তমানে জানে না তাদের নিজস্ব ভাষা রয়েছে। নৃ-গোষ্ঠী পল্লীর মাড়মি গ্রামের নতুন প্রজন্মের শিশুরা ও তরুণরা ক্রমেই নিজের মাতৃভাষার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।

পাহাড়িয়া সম্প্রদায়ের মাড়মি নৃ-গোষ্ঠী ও বøক প্রধান পিটার বিশ্বাস (৬০) বলেন, আফসোস জানলেও এখন আর কেউ বলতে পারে না সে ভাষা। সংরক্ষিত না থাকার কারণে আমরা প্রবীণরা বলতে পারলেও লিখতে জানি না আমাদের ভাষা। নিজস্ব কোনো বর্ণমালাও নেই। বাংলা ভাষায় পড়াশোনা করে তরুণ প্রজন্ম চাকরি করছে এবং লেখার সব কাজ হয় বাংলায়। এজন্য ধীরে ধীরে এ ভাষা হয়তো একদিন হারিয়ে যাবে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রায় ৪০০জন নৃ-গোষ্ঠী মাল পাহাড়িয়া সম্প্রদায়ের লোক ওই মাড়মি পল্লীতে বসবাস করেন। নওগাঁ, নাটোর ও রাজশাহী জেলায় এই সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস করেন। তাদেরও মাতৃভাষা ‘মালতো’।

পাবনা ঈশ্বরদীর সাবেক কলেজ শিক্ষক ভাষা গবেষক অধ্যাপক উদয়নাথ লাহিড়ী জানান, নতুন প্রজন্মের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশু ও তরুণরা বাংলা ভাষাতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। হারিয়ে যাচ্ছে মাল পাহাড়িদের ‘মালতো’ ভাষা। হয়তো একদিন এই ভাষার কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।

ঈশ্বরদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আক্তার বলেন, ‘মালতো ভাষায় আলাদাভাবে লেখাপড়ার বিষয়ে স্থানীয় বা সরকারিভাবে এখনো পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি তারা এখন বাংলা ভাষায় লেখাপড়া করে। তবে কেউ উদ্যোগ নিলে সরকারিভাবে আমাদের পক্ষ থেকে যথাসম্ভব তাদের সহায়তা করা হবে।