মণিরামপুরে ইরি-বোরো ধান কাটা শুরু, বাম্পার ফলনে খুশি কৃষক

মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জে ইরি-বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। রাজগঞ্জ এলাকার ঝাঁপা, চালুয়াহাটি, মশ্বিমনগর, হরিহরনগর, খেদাপাড়া ও রোহিতা এই ৬ টি ইউনিয়নে কমবেশি অনেক মাঠেই ধান কাটছে কৃষক। কৃষকরা, তাদের স্বপ্নের চকচকে সোনালী ধান ঘরে তুলতে কোমরবেঁধে কাজ শুরু করেছে। নতুন ধানের সৌরভ ও পাখির কলতানে এখন মুখরিত রাজগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাঠগুলো।

কৃষকরা জানিয়েছেন- আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রায় সব ধানই কাটা পড়বে।

রাজগঞ্জের ঝাঁপা ইউনিয়নের হানুয়ার মাঠে বোরো ধান কাটছেন কৃষক আমিরুল ইসলাম (৪০)। তিনি বলেন- গেল কয়েক বছরের তুলনায়, এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। প্রতি বিঘায় মোটা ধানের ফলন হচ্ছে ২৮ থেকে ৩০ মণ। সরু ধানের ফলন আসছে ২৫ থেকে ২৮ মণ। এটিকে বাম্পার ফলন বলছেন কৃষকরা। তবে দু’য়েকটি জমির ধান পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়েছে।

হানুয়ার গ্রামের বোরো চাষি সরোয়ার হোসেন (৩৫) বলেন- চলতি মওসুমের ইরি-বোরো চাষে বিঘা প্রতি খরচ হচ্ছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। যা গত বছরের তুলনায় এবছর প্রায় ৫ হাজার টাকা বেশি খরচ। বেশি খরচের কারণ হিসেবে তিনি বলেন- সার, কীটনাশক ও কৃষি শ্রমিকের মূল্যবৃদ্ধি।

একই এলাকার আব্দুল খালেক (৫০) নামের অপর এক চাষি বলেন- এখন নতুন ধানের বাজার দর ভালো। প্রতিমণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৯শ’ থেকে সাড়ে ৯শ’ টাকা দরে।

চাষিরা বলেন- ভরা মৌসুমে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দর কমায়। বাধ্য হয়ে কম দরে ধান বিক্রি করতে হয়। তাই বাজারে তদারকি বাড়ানোর পাশাপাশি ফলন ও উৎপাদন খরচ হিসাব করে সরকারী দর বেঁধে দেয়ার দাবিও জানান কৃষকরা।

চাষি সিরাজুল ইসলাম বলেন- আমাদের জমি থেকে উৎপাদিত স্বপ্নের সোনালী ফসল ইরি-বোরো ধান এখন ঘরে তোলা’ই বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ আকাশে মেঘ হচ্ছে। যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে সব আশা-ভরসা শেষ হয়ে যাবে। এখনো আবহাওয়া অনুকুলে রয়েছে।

স্থানীয় উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা ভগীরত চন্দ্র বলেন- চলতি মওসুমে মণিরামপুরে কৃষকের অনুকুলে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। কৃষকেরা কোনো ঝামেলা ছাড়াই সুষ্ঠ-সুন্দর পরিবেশে ধানের আবাদ করতে পেরেছে। আমরা সবসময় কৃষকের পাশে আছি। মণিরামপুরে পুরোদমে ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হতে আরো সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে বলে জানান তিনি।