মাদারীপুরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প বিপর্যয়ের মুখে

মাদারীপুরে এক সময়ের ঐতিহ্য মৃৎশিল্পের জমজমাট বাজার ছিলো তা এখন আর নেই। আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এ শিল্প আর টিকে থাকতে পারছেনা। এ যুগে মেলামাইন, প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের পণ্যে এখন বাজার দখল করে নিয়েছে। আগে মাটির তৈরি পিঠার সাজ, হাঁড়ি, মালসা, জালের কাটি, পুতুল, মাছ, পেয়ালা, সুরাই, কলস, ফুলদানিসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ক্রেতাদের বেশি আর্কষণ করতো। অনেকে শখের বসে এগুলো কিনে নিয়ে যেত বাড়িতে। এখন করোনাভাইরাস, বিভিন্ন সমস্যা সেই সাথে রয়েছে পৃষ্ঠপোষকতার অভাব এ কারণে আধুনিক যুগে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পটি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।

এ শিল্পের প্রধান উপকরণ হচ্ছে মাটি। আঠালো পরিষ্কার এঁটেল মাটি দিয়ে কুমাররা তাদের হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞান দিয়ে পিঠার সাজ, হাঁড়ি, মালসা, জালের কাটি, পুতুল, মাছ, পেয়ালা, সুরাই, কলস, ফুলদানিসহ নানান জিনিস তৈরী করেন। একাজে অনেক যতœ আর শ্রম দরকার যা কুমারদের কাছে এসব কাজ খুব সহজ। এসব কাজ মাদারীপুরের কুমারা বংশ পরম্পরায় করে আসছেন। এযুগে আগের মতো তাদের ব্যবসায় আর জমজমাট আর নেই। মাদারীপুরের পুরান বাজারের স্বর্ণকার পট্টি এলাকার দোকানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে কুমারদের তৈরী করা সেইসব জিনিসপত্র কিন্তু কেনার ক্রেতার অভাব তাই অনেক দোকানদারা অলস সময়ে দিন কাটাছেন। কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় মেলামাইন, প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের পণ্যের ভিড়ে মাদারীপুরের শত শত বছরের ঐতিহ্যের মৃৎশিল্প আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। মাদারীপুরে এ পেশার সাথে সম্পৃক্ত মৃৎশিল্প পরিবার এখন মানবতার জীবনযাপন করছেন।

মৃৎশিল্পের দোকানদার সজল সাহা বলেন, সরকার থেকে যদি সাহায্য সহযোগিতা করত তা হলে আমরা বেচে যেতে পারতাম। প্রতিদিন একশত থেকে দুইশত টাকার বিক্রিতে আমাদের সংসার চলে না।

এ বিষয় মাদারীপুর শহরের সমাজসেবা অফিসার শ্যামল পান্ডে জানান, সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রাণতিক জনগোষ্ঠীর জরিপ কাজ এখন চলছে।

এ মৃৎশিল্পকে যদি বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে এবং সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা দিলে এ শিল্পটি উঠে দাড়াবে এমনটি আশা করছেন কুমারা। তাদের ব্যবসাটি আগের মতো জমে উঠবে।