মিশ্র ফসলের সমন্বিত আবাদ করে সফলতা পেয়েছেন যশোরের প্রান্তিক চাষী শফিকুল

সবজি আবাদের জন্য নিরাপদ জোন হিসেবে খ্যাত যশোরের মনিরামপুর উপজেলার মশ্বিমনগর ইউনিয়নের পারখাজুরা গ্রামের একজন প্রান্তিক চাষি শফিকুল ইসলাম।

বিভিন্ন ধরনের সবজি আবাদ করে তিনি সফলতা পেয়েছেন। তার সংসার এখন বেশ সচ্ছল। সচ্ছলতার মুখ দেখেছেন তিনি হরেক রকমের সবজি চাষ করে। লাউ, পটল, শীম, বেগুন, কলা, করল্লা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, মূলা, পেঁপে, মানকচু, ওলকচু, মুখি কচু, মেটে আলু, বরবটি, ঢেঁড়শ, মিষ্টি আলু, ঝিঙা, চিচিংগাসহ হরেক রকমের সবজি চাষে রয়েছে তার দক্ষতা।

একজন সফল চাষী হিসেবে তাই এলাকায় শফিকুলের বেশ সুনাম ও পরিচিতি রয়েছে। চলতি বছর তিনি একই জমিতে মিশ্র ফসলের সমন্বিত আবাদ করে বেশ সফলতা পেয়েছেন। তিনি এলাকার চাষীদের এক অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন।

এ বছর তিনি একটি ক্ষেতে একই সাথে ওলকচু, হলুদ ও মরিচ চাষ করেছেন। ইতিমধ্যে কয়েক চালান শুধুমাত্র মরিচ বিক্রি করেই খরচের টাকা উঠিয়েছেন শফিকুল। তিনি জানান- ৪২ শতক জমিতে গত এপ্রিল মাসে হলুদ,ওলকচু ও মরিচ ফসলের আবাদ করি। এতে ১৫০০ ওলকচুর মূখী, অন্ততঃ ৮০ কেজি হলুদ ও প্রায় ৬০০ পিচ মরিচের চারা রোপন করি।

এ আবাদে এ পর্যন্ত সবমিলে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। গত অক্টোবর মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ছয় চালান মরিচ বিক্রি করে খরচের টাকা উঠে গেছে। আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত এভাবেই মরিচ উঠানো যাবে। এছাড়া ১৫০০ পিচ ওলকচুর চাকি (বীজ), অন্ততঃ ৭০মন হলুদ পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। আনুমানিক দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি। মশ্বিমনগর ইউনিয়নের উপসহকারি কৃষি অফিসার মোঃ হাসানুজ্জামান বলেন- নিজস্ব প্রযুক্তি দিয়ে সমন্বিত ফসল চাষের জন্য চাষি শফিকুল ইসলামকে উদ্ধুদ্ধ করা হয়।

তার এই আবাদে সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই সমন্বিত ফসল আবাদে ঝুঁকেছেন। চাষি শফিকুল এখন একজন সফল চাষি, এক অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত। উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অফিসার অজয় কুমার বিশ্বাস বলেন- চলতি রবি মৌসুমে উপজেলায় অন্ততঃ ২ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে চাষীদের প্রয়োজনীয় নিয়মিত পরামর্শ ও কারিগরী সহায়তা দিয়ে সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়। উপজেলা কৃষি অফিসার ঋতুরাজ সরকার বলেন- মনিরামপুর উপজেলা একটি নিরাপদ সবজি উৎপাদনের জন্য সমৃদ্ধ।
এখানকার উৎপাদিত সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও দেশ বিদেশে নিয়মিত রপ্তানী হয়। উপজেলার পারখাজুরা গ্রামের চাষি শফিকুল ইসলাম ওকই জমিতে সমন্বিত তিন ফসল চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। ভিন্ন ফসল ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে চাষাবাদের জন্য মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি অফিসাররা কাজ করছেন।