রমজান মাসে সওয়াবের আশায় কম দামে দই বিক্রি করেন রংপুরের সাহাবুল

পবিত্র রমজান এলেই সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দেন সব ব্যবসায়ীরা। অতি মুনাফা লাভের আশায়- তারা চিন্তায় থাকেন যে কবে রমজান মাস আসবে। এই এক মাসের লাভ যেন ১১ মাসের সমান করা যায়- এমন একটা প্রচেষ্টা থাকে তাদের। এ ধরনের পরিস্থিতিতেও সওয়াব এবং আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভের আশায় মুনাফার অংশ ছাড় দিয়ে দই বিক্রি করেন রংপুরের দই বিক্রেতা সাহাবুল ইসলাম।

সারা বছর যে দামে দই বিক্রি করেন, তার থেকে প্রায় শতকরা ৪০ শতাংশ ছাড়ে দই বিক্রি করছেন তিনি। গত তিন বছর ধরে তিনি এই রীতি চালু রেখেছেন বলে জানান সাহাবুল ইসলাম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রংপুর নগরীর সিটি বাজার সংলগ্ন ভাঙ্গা জামে মসজিদ মার্কেটের নিচ তলায় মুসলিম সুইটস অ্যান্ড দধি ঘর। দোকানের সামনে রমজান উপলক্ষে লাভের অংশ ছাড় দিয়ে দই বিক্রি করা হচ্ছে এমন নোটিশ টানানো হয়েছে। সেই নোটিশে লেখা রয়েছে, রমজান উপলক্ষে প্রতি কেজি মিষ্টি দইতে ৬০ টাকা ছাড় দিয়ে তা ২০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া টক দইতে ৬০ টাকা ছাড় দিয়ে তা ১০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

মুসলিম সুইটস অ্যান্ড দধি ঘরের কর্মচারী হৃদয় হাসান বলেন, সারা বছরই আমাদের দইয়ের চাহিদা থাকে। তবে রমজানে দই বেশি বিক্রি হয়। দোকানের মালিক (সাহাবুল ইসলাম) রমজান মাস এলে লাভ-ক্ষতির হিসেব না করে, ছাড় দিয়ে দই বিক্রি করেন।

এ দোকানের দইয়ের নিয়মিত ক্রেতা এস এম খলিল বাবু বলেন, আমি নিয়মিত এই মুসলিম সুইটস অ্যান্ড দধি ঘর থেকে দই কিনে থাকি। প্রতি রমজানে বিশেষ ছাড় দিয়ে দই বিক্রি করে তারা। বিষয়টা খুবই ভালো। যেখানে অন্যরা বেশি মুনাফায় পণ্য বিক্রি করছে, সেখানে তিনি লাভের অংশ ছাড় দিয়ে বিক্রি করছেন। এটাই ইসলামের শিক্ষা হওয়া উচিত।

অন্য আরেক ক্রেতা ইউসুফ আলী বলেন, রমজান মাস এলে সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। সেখানে সাহাবুল ভাই কম দামে দই বিক্রি করেন। অবশ্যই এটা একটি চমৎকার উদাহারণ।

এ প্রসঙ্গে মুসলিম সুইটস অ্যান্ড দধি ঘরের প্রোপাইটার সাহাবুল ইসলাম জানান, ব্যবসায় লাভের চিন্তা অথবা ব্যবসার কোনো পলিসি থেকে এই ছাড় নয়। পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সওয়াবের আশায় এবং আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভের জন্য এই ছাড়। আমি সারা বছরই লাভ করি। এক মাস লাভ না করলে কোনো ক্ষতি নেই।