রংপুরের মিঠাপুকুরে বিয়ের দাবিতে প্রমিকের বাড়িতে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকার অনশন!

রংপুরের মিঠাপুকুরে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নাবালিকা বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে উঠার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে ওই তরুন প্রেমের সম্পর্ক অস্বীকার করে নাবালিকাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। অনাগত সন্তানটির ভবিষ্যৎ এবং পিতৃ পরিচয় নিয়ে স্থানীয়রা সংশয় প্রকাশ করেছেন।তাদের দাবি, উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে পড়ার পূর্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা জরুরি। নাহলে সামাজিক অবক্ষয়ের সৃষ্টি হতে পারে।

বুধবার (৩-এপ্রিল) মিঠাপুকুর উপজেলার ০৭ নং লতিবপুর ইউনিয়নের তনকা নিঝাল গ্রামের হাজীরমোড় নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। এ রিপোর্ট লেখা অবধি বিয়ের আশ্বাসে ওই তরুণী তার বাবার বাড়িতে ফিরেছেন।

বৃহস্পতিবার (৪-এপ্রিল) ভোরে মিঠাপুকুর উপজেলার হাজীরমোড় নামক স্থানে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে ওঠা এক নাবালিকা তরুণীর (১৪) গ্রাম্যসালিশে স্থানীয়ভাবে হাজির করে অব্যাহত চাপ প্রয়োগ করে মানসিক টর্চার করে মিমাংসার চেষ্টা চলছে এমন খবর পেয়ে সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে উক্ত সালিশকারীরা সাংবাদিকদের প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ এবং ভিডিও ধারনে বাঁধা দেয়। পরে তাদের বিচারকার্য থেকে জানা যায়, একই উপজেলার তনকা মামুদপুর গ্রামের দিনমজুর মিলনের নাবালিকা কন্যা পাশ্ববর্তী নিঝাল গ্রামে তার নানার বাড়িতে গেলে ৫/৬ মাস পূর্বে নুরুজ্জামান (কিনু) মিয়ার নাবালক পুত্র মোঃ মিল্লাত হাসান(১৮), জোরপূর্বক তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষক মিল্লাত জানায়, তাকে সে বিয়ে করবে। পরে বিয়ের প্রলোভণে তার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে।

নাবালিকার পরিবার ওই তরুণীর শারীরিক পরিবর্তনের বিষয়টি বুঝতে পেরে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে দেখতে পারে তরুণী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পরে ওই তরুণী বিয়ের জন্য প্রেমিক মিল্লাত হাসানকে চাপ দিলে সে সব অস্বীকার করে জানায়, ওই তরুণী আরো অনেকের সঙ্গে শারিরীক সম্পর্ক করেছে। সূতরাং ওই সন্তান তার একার নয়। শেষে বাধ্য হয়ে ওই নাবালিকা বিয়ের দাবিতে মিল্লাতের বাড়িতে উঠার চেষ্টা করে।

স্থানীয় সালিশে নাবালিকার সন্তানের জন্য কয়েকজনকে স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করে সালিশকারীরা। তবে সাংবাদিকরা উপস্থিত হওয়ায় তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। শেষে বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে ওই তরুণীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, কে এই সন্তানের বাবা তা পরিস্কার করে বলা যাচ্ছেনা। তবে স্থানীয় কিছু টাউট বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করায় ভিকটিম ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবে।

এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।