সুন্দরবনের বাঘের মুখ থেকে ফিরে এলো শরণখোলার জেলে লুৎফর

সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের মুখ থেকে জীবন নিয়ে ফিরে এলেন শরণখোলার সুন্দরবন সংলগ্ন সোনাতলা গ্রামের জেলে লুৎফর রহমান হাওলাদার (৫০)।

ঘটনাটি ঘটেছে গত ৭ মে পূর্ব সুন্দরবনে শরণখোলা রেঞ্জের শেলার চরের কালামিয়ার খাল এলাকায়। আহত লুৎফর গত ৮ মে রাতে শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, শরণখোলা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন সোনাতলা গ্রামের বাসিন্দা আঃ রশিদ হাওলাদারের পুত্র জেলে লুৎফর রহমান হাওলাদার গত ১ মে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ থেকে অনুমতি (পাশ) নিয়ে শেলার চরের কালামিয়ার খাল এলাকায় তার আপন ভাই সোহেল, শ্যালক হাসান ও ভাইয়ের ছেলে খায়রুল কে নিয়ে মাছ ধরতে যায়। ৭ মে সন্ধ্যার দিকে খালের পাসে জাল ফেলে মাছ ধরছিলেন লুৎফর। হঠাৎ সুন্দরবনের একটি বাঘ তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে। এ সময় লুৎফর বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার শুরু করে। তার চিৎকার শুনে তার সঙ্গীয় জেলেরা লাঠি সোটা নিয়ে বাঘকে মারপিট শুরু করে। এক পর্যায়ে বাঘটি লুৎফরকে ছেড়ে বনের মধ্যে পালিয়ে যায়। পরে আহত লুৎফরকে নিয়ে ৮ মার্চ সন্ধ্যায় উপজেলার সোনাতলা গ্রামের নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। রাতে শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়।

তার ভাই সোহেল জানায়, তার চিৎকার শুনে তাৎক্ষনিক বাঘের উপর লাঠি ও দা দিয়ে হামলা চালালে বাঘ তাকে ছেড়ে দেয়। তবে তার মুখের ডান দিকে নখ দিয়ে আঁচোড় দেওয়ায় কেটে গেছে এবং মাথায় গুরুতর আঘাত পায়।

বাঘের আক্রমন থেকে প্রাণে রক্ষা পাওয়া জেলে লুৎফর বলেন, বাঘটি ঝাপিয়ে পড়ার সময় একটি গাছের সাথে বাঘের ধাক্কা লাগে। যার জন্য তার আঘাত মুখে না লেগে মাথায় লেগেছে। মাথার উপরে আঘাত লেগেছে ও নখের আঁচোড়ে অনেকখানি কেটে গেছে। তিনি এখন সুস্থ নয় বলে জানান। আহত লুৎফর জানায় তাকে বাঘের আক্রমণের বিষয়টি তার মহাজন উপজেলার বকুলতলা গ্রামের লিটন মাতুব্বর বন বিভাগকে অবহিত করেছেন।

এ ব্যাপারে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী স্বাস্থ্যকর্মকর্তা সুমি আক্তার বলেন, বাঘের আক্রমণে আহত লুৎফরের গালে নখের আঁচোড় গুরুতর নয়, মাথায় কিছুটা আঘাত পেয়েছেন। চিকিৎসাপত্র দিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মোঃ মাহবুব হাসান জানান, বাঘের আক্রমণে জেলে আহত হয়েছে এমন খবর তিনি শুনেননি, তবে খোাঁজ খবর নিবেন বলে জানান।