‘আরবের আধুনিকতা থেকে শিখুক মুসলিম রাষ্ট্রগুলো’

সৌদি আরবের উদাহরণ দিয়ে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে আক্রমণ করলেন তসলিমা নাসরিন। রক্ষণশীল মুসলিম দেশগুলোর সৌদি আরবকে দেখে শেখা উচিত বলেও দাবি করেছেন বাংলাদেশের নির্বাসিত এই লেখিকা।

ইসলাম ধর্ম বা মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে তসলিমা নাসরিনের বিরোধ দীর্ঘদিনের। সেই কারণেই নিজের জন্মভূমি ত্যাগ করতে হয়েছিল লজ্জার লেখিকাকে। ঠাঁই মেলেনি এপার বাংলাতেও। পড়শি রাষ্ট্র ভারত দেয়নি নাগরিকত্ব।

এত কিছুর পরেও নিজের অবস্থানে বরাবর অনড় থেকে গিয়েছেন তসলিমা নাসরিন। নিজস্ব ভঙ্গিমায় লিখে গিয়েছেন সকল ধর্মের বিরুদ্ধে। তাঁর নিশানায় পড়তে হয়েছে অমুসলিমদেরও। এসেছে পালটা প্রতি-আক্রমণ। তবুও নিজের অবস্থান থেকে সরেননি তিনি। ইসলামের চিরাচরিত ধ্যান ধারনা ছেড়ে বাইরে আসছে সৌদি আরব। গত কয়েক বছরে আমূল বদল এসেছে সৌদির সমাজ জীবনে। পুরুষসঙ্গী ছাড়া একা ভ্রমণ ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ছাড়পত্র পেয়েছিল মহিলারা। সেনাবাহিনীতেও এখন যোগ দিতে পারেন ওই দেশের মহিলারা।

সৌদি যুবরাজের মুখে শোনা গিয়েছে নারী-পুরুষ সমানাধিকারের কথা। আরও বড় বিষয় হচ্ছে চলতি সপ্তাহেই সিনেমা হল চালু হয়েছে সৌদি আরবে। যার ফলে দীর্ঘ ৩৫ বছর পরে সিনেমা দেখতে পারবেন সৌদি মহিলারা।

দীর্ঘ সাড়ে তিন দশক পরে সিনেমা হল চালু হলেও ওই দেশের অনেক মহিলা এই প্রথমবার সিনেমা হলের স্বাদ পেতে শুরু করেছেন। এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করেই মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে আধুনিক হওয়ার কথা বলেছেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন।

তাঁর কথায়, “মুসলিম দেশগুলি সৌদি আরবকে অনুসরণ করার কথা বলে এবং সেই ধর্মের অজুহাত দেখিয়েই আমায় তীব্র আক্রমণ করা হয়েছিল।”

একই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “সৌদি আরব ক্রমাগত আধুনিক হচ্ছে। প্রথম সিনেমা চালু করল।” এরপরেই মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর কাছে লেখিকা প্রশ্ন করেছেন, “মুসলিম দেশগুলি কী এখনও রক্ষণশীল হয়েই থকবে, নাকি আধুনিক হবে?”

সৌদি আরবেই যাত্রা শুরু হয়েছিল ইসলাম ধর্মের। ওই দেশেই রয়েছে ইসলামের পবিত্র তীর্থস্থান মক্কা-মদিনা। প্রতি বছরে বহু মানুষ হজ করতে যান ওই দেশে।

অন্যদিকে, ছবি তোলা বা দেখা ইসলাম ধর্মে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এই নিয়ে বাংলাদেশে একটি বিখ্যাত সিনেমা তৈরি হয়েছিল ‘টেলিভিশন’ নামে।

যে দেশ থেকে ইসলাম ধর্মের উৎপত্তি হয়েছিল সেই দেশের এই বদল থেকে বিশ্বের অন্য সকল মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে শিক্ষা নেওয়ার কথা বলেছেন দুঃসহবাসের শ্রষ্ঠা তসলিমা নাসরিন।

-কলকাতা২৪x৭ এর সৌজন্যে