সুনামগঞ্জের শাল্লায় ভেসে যাওয়া মায়ের মরদেহ উদ্ধার, দুই সন্তান এখনও নিখোঁজ

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় ঢলের পানিতে ভেসে যাওয়া মা দুর্লভ রানী দাসের (৩০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে; কিন্তু দুই শিশুসন্তান এখনও নিখোঁজ। তবে উদ্ধার তৎপরতা চলছে।

মঙ্গলবার, (২০ জুন) সকাল ১১টার দিকে দাড়াইন নদী থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা মরদেহটি উদ্ধার করেন।

দু্র্লভ রানী দাস উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের বিলপুর গ্রামের রতিন্দ্র দাসের স্ত্রী। তাদের দুই সন্তান জবা রানী দাস (৭) ও বিজয় দাসের (৫) সন্ধান এখন পর্যন্ত মেলেনি। মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে আর ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ছিল।

শাল্লা উপজেলা সদরের দাড়াইন নদীর তীরঘেঁষা বাহাড়া সড়কে সোমবার, ১৯ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢলের পানিতে ভেসে গিয়ে মা ও সন্তানরা নিখোঁজ হয়।

রতিন্দ্র দাস মুঠোফোনে জানান, তিনি পেশায় কৃষক। বিকেলে গ্রামের এক বাড়িতে সন্তানদের নিয়ে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যোগ দেন। পরে কাজে বাইরে যান। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে দেখেন স্ত্রী-সন্তানরা ঘরে নেই। এরপর খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে রাতেই খবর পেয়ে উপজেলা সদরে গিয়ে তাদের নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত হন। তবে তিনি জানেন না কেন তার স্ত্রী দুই সন্তানকে নিয়ে উপজেলা সদরে আসছিলেন। তার গ্রাম থেকে ঘটনাস্থল ঘণ্টাখানেকের পথ।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো আবু তালেব জানান, উপজেলা সদরের মূল সড়কে সেতুর পাশে বাহাড়া সড়কে একটি কালভার্ট আছে। সেটা বৃষ্টি ও পানির চাপে কিছুটা দেবে গেছে। এখন সেই জায়গায় হাঁটু পরিমাণ পানি। ঢলের পানি আসায় দাড়াইন নদীতেও এখন তীব্র স্রোত। সোমবার সন্ধ্যায় দুর্লভ রানী দাস দুই শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে কালভার্টের প্লাবিত অংশ পার হয়ে উপজেলা সদরে আসতে চাইছিলেন। তখন একজন মোটরসাইকেল চালক পানিতে স্রোত বেশি থাকায় তাদেরকে এদিকে আসতে নিষেধ করেন; কিন্তু তিনি তা না শুনে সন্তানদের নিয়ে কালভার্ট অতিক্রম করতে গিয়ে পানির তোড়ে ভেসে যান। তাৎক্ষণিক একজন পানিতে নামলেও তাদেরকে উদ্ধার করা যায়নি।

খবর পেয়ে দ্রুত ইউএনও একদল পুলিশসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। এরপর থেকে স্থানীয় লোকজন কয়েকটি নৌকা নিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন।

শাল্লা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (আল আমিন চৌধুরী) ও ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট দিপু রঞ্জন দাস শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।