কুড়িগ্রামে চড়া দামেও মিলছে না নন ইউরিয়া সার, বিপাকে আলু চাষীরা

আলু চাষের ভরা মৌসুমে নন ইউরিয়া সারের সংকটে বিপাকে পড়েছে আলু চাষীরা। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি এমওপি (পটাশ) টাকা ৪ টাকা ও টিএসপি ৬ টাকা বাড়তি গুণতে হচ্ছে কৃষকদের। তবে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সার না থাকায় বাড়তি দামেও সার সংগ্রহ করতে পারছেনা কৃষকরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, গত নভেম্বর মাসে জেলায় ২ হাজার ২৯৫ মে.টন এমওপি, ১ হাজার ৪৮৩ মে.টন টিএসপি ও ৩ হাজার ৪৩৬ মে. টন ডিএপি সার বরাদ্দ করা হয়। একইভাবে ডিসেম্বর মাসে ২ হাজার ৯৪৯ মে.টন এমওপি, ২ হাজার ১৩৮ মে. টন টিএসপি ও ৫ হাজার ৪৮ মে. টন ডিএপি সার বরাদ্দ করা হয়েছে। এর বাইওে ডিসেম্বর মাসে আরো অতিরিক্ত ৫০০ মে. টন নন ইউরিয়া সার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

সুত্রে আরো জানা গেছে, গত মাসে সদর উপজেলার বিসিআইসির ১১ ডিলারের প্রতিজন ১২ মে.টন টিএসপি, প্রায় ২৭ মে.টন এমওপি ও ৩৩ মে. টন করে ডিএপি সার বরাদ্দ পেয়েছেন। বিএডিসির ১৮ জন ডিলার প্রতিজন প্রকারভেদে ২-৪ মে. টন সার বরাদ্দ পেয়েছেন। তারপরেও কেন সারের সংকট এ নিয়ে ধোঁয়াশা বিরাজ করছে। কৃষকদের অভিযোগ সংকট দেখিয়ে সার ব্যাবসায়ীরা হাতিয়ে নিচ্ছে বাড়তি টাকা।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী শিবরাম গ্রামের কৃষক বাবুল আখতার জানান, তারা তিন ভাই মিলে ১১ একর জমিতে আলুর চাষ করেছেন। কিন্তু মৌসুমের শুরু থেকে সময়মত সার পাচ্ছেননা। কয়েকদিন আগে আগমনি বাজারের এক সার ব্যসসায়ীর কাছে প্রতি বস্তা পটাশ ৯৫০ টাকা ও টিএসপি ১৫০০ টাকায় কিনলেও রসিদ দেয়নি ব্যবসায়ী। খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, বেশিরভাগ সময় সার পাওয়া যায়না। বরাদ্দ অপ্রতুলের অজুহাতে ডিলারদের কেউ কেউ বাড়তি দাম নিলেও কোন রসিদ দেয়া হয়না। ফলে অভিযোগ করেও ফল পাওয়া যায়না।

কুড়িগ্রাম ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশনে সাধারণ সম্পাদক সামছুল ইসলাম মন্ডল সরকার নিধার্রিত মূল্যের বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, খুচরা বিক্রেতারা অতিরিক্ত দাম নিলে তাদের করার কিছুই নেই।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক মো: মন্জুরুল হক জানান, এবছর বিএডিসির সার সরবারহে কিছু জটিলতার কারণে কিছু সমস্যা হয়েছিল, তবে বর্তমানে সারের কোন সংকট নেই। বেশি দাম নেয়ার অভিযোগও সত্য নয়। তবে যেসব ইউনিয়নে আলুর আবাদ বেশি সেখানে সাময়িক সংকট হলেও পাশ্ববর্তি এলাকা থেকে সংগ্রহের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানিয়েছেন, সারের দাম নিয়মিত মিনিটরিং করা হচ্ছে। কোথাও উচ্চমূল্য নিলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।