পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় মুকুলে ছেয়ে গেছে আম্রকুঞ্জ

সর্বোউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা আমের মুকুলে ভরপুর। ঘ্রাণে মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত। মুকুলের ভারে নুয়ে পড়ার উপক্রম প্রতিটি গাছ। মৌমাছিরাও আসতে শুরু করেছে মধু আহরণে। ফুলের সমারোহে প্রকৃতি যেমন সেজেছে বর্ণিল সাজে তেমনি নতুন সাজে যেন সেজেছে তেঁতুলিয়া উপজেলার গ্রাম-গঞ্জের আমের গাছ ও আমের বাগানগুলো। আমের মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে বাগানগুলো। প্রায় ৬০ শতাংশ গাছেই আসছে মুকুল।

বাগান মালিক, কৃষিবিদ, আমচাষিরা আশা করছেন- বড় ধরনের কোনো প্রকৃতিক দূর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ উপজেলায় আমের বাম্পার ফলন হবে। আমচাষি ও বাগান মালিকরা বাগানে পরিচর্যা নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। অবশ্য গাছে মুকুল আসার আগে থেকেই গাছের পরিচর্যা করে আসছেন তাঁরা। যাতে করে গাছে মুকুল বা গুটি বাধার সময় কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয়। সারিবদ্ধ গাছে ভরপুর আমের মুকুল যেন শোভা ছড়াচ্ছে তার নিজস্ব মহিমায়। এ উপজেলা ফজলি, খিড়সা, মোহনা, রাজভোগ, রূপালী, গোপালভোগসহ অন্যান্য জাতের আম চাষের উপযুক্ত হওয়ায় চাষিরা নিজ উদ্যোগে প্রথমে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে চারা সংগ্রহ করে আমের বাগান সৃজন করলেও বর্তমানে তারা নিজেরাই চারা উৎপাদন করে তাদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সুফলও পেয়েছেন অনেকেই।

আম চাষে সফল আম বাগান মালিক উপজেলা সদরের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী আনিছুর রহমান জানান, পুরোপুরিভাবে এখনো সব গাছে মুকুল আসেনি। কয়েকদিনের মধ্যেই সকল গাছেই মুকুল আসবে যদি মহান আল্লাহ পাক সহায় করেন।

চেয়ারম্যান কাজী আনিছুর রহমানের মতো উপজেলার অনেকেই আমের বাগান তৈরি করছেন।
তারা জানান, ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ কম থাকায় এবার কাঙ্খিত ফলনের আশা করছেন আম চাষিরা। সুবিধাভোগীদের সুফল দেখে চাষিরা আম চাষে উৎসাহিত হয়ে নিজ নিজ উদ্যোগে নতুন নতুন বাগান সৃজন করছেন। ধীরে ধীরে এ উপজেলা জুড়ে সম্প্রসারিত হচ্ছে আমের বাগান। উৎপাদিত আম মানসম্মত হওয়ায় চাহিদাও বাড়বে অনেক।

এ ব্যাপারে আম বাগান মালিক তিরনইহাট ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন ও রওশনপুর প্রধানপাড়া গ্রামের কাজল বলেন, ঝড় ও শিলা বৃষ্টি না হলে আশা করা যাচ্ছে এবারও আমের ফলন ভালোই হবে। আমের মুকুল ভালো এসেছে গাছে গাছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, তেঁতুলিয়ায় এবার আম চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২৩০ হেক্টর জমি ধরা হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, এবার এ উপজেলায় নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক মাস আগেই আবহাওয়াগত ও জাতের কারণেই মূলত আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। তবে ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি হতে প্রতিটি গাছেই পুরোপুরিভাবে মুকুল ফুটতে শুরু করবে বলে আশা করছি। তেঁতুলিয়া উপজেলায় বিরাজমান আবহাওয়া ও মাটি আম চাষের জন্য বিশেষ উপযোগি হয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকলে আমের উৎপাদন গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।