ময়মনসিংহে ১০ বীরাঙ্গনা পেলেন আশি হাজার টাকার অনুদান

ময়মনসিংহের ফুলপুর, হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়ার উপজেলার ১০ বীরাঙ্গনা পেলো বন্যা পরবর্তী ৮০ হাজার টাকার অনুদান। প্রতিজনকে ৮ হাজার টাকা করে ১০ জনকে এই ৮০ হাজার টাকার অনুদান দিয়েছে নারীপক্ষ নামে ঢাকার একটি বেসরকারী সংগঠন।

নারীপক্ষ নামের সংগঠনের পক্ষ থেকে সোমবার (১ আগস্ট) ও মঙ্গলবার (২ আগস্ট) ফুলপুরে ১০ বীরমাতা বীরাঙ্গনার হাতে বন্যা পরর্বতী অনুদানের এই টাকা তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক সাংবাদিক এটিএম রবিউল করিম রবি।

অনুদানপ্রাপ্ত বীরমাতা বীরাঙ্গনারা হলেন, সুরবালা রাণী (ফুলপুর), শহর বানু (ফুলপুর), সুফিয়া খাতুন (ফুলপুর), হালিমা খাতুন (ফুলপুর), ময়মনা খাতুন (ফুলপুর), জেলেকা খাতুন (ধোবাউড়া), সখিনা খাতুন (ধোবাউড়া), আমেনা খাতুন (ধোবাউড়া), পয়রবী খাতুন (হালুয়াঘাট) ও রুমেছা খাতুন দুঃখু (হালুয়াঘাট)। এদের মাঝে ৩ জন সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এবং ৭ জন এখনো সরকারি স্বীকৃতি পায়নি।

সরকারি স্বীকৃতি না পাওয়া ৭ জন বলেন, সরকারি স্বীকৃতি না হওক বেসরকারি হয়েছে। তাতে তাঁরা আশার বীজ বপন করতে পারছেন।

এই ৭ জন বীরাঙ্গনার দাবি, যে দেশের জন্য আমরা আমাদের নারী জীবনের অমূল্য সম্পদ হারিয়েছি, সে দেশ আমাদের হারানোর স্বীকৃতিটা অন্তত দিক। আমাদের ভাতা ও অনুদানের চেয়ে স্বীকৃতিটা প্রয়োজন বেশি। কারণ পাক-হানাদার বাহিনীর অপকর্মের শিকার হয়ে আমরা এখন সামাজিক, মানসিক ও স্বাস্থ্যগত ভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় জীবন যাপন করছি। স্বাধীনতার এতো বছর পরও পাক হানাদারদের প্রেতাত্মাদের থেকে মুক্তি পায়নি। যার জন্য সব সময় চরম মানসিক চাপে থাকতে হয়।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক সাংবাদিক এটিএম রবিউল করিম রবি বলেন, সরকারি স্বীকৃতি না পাওয়া ৭ বীরমাতা বীরাঙ্গনাকে নারীপক্ষ প্রতিমাসে ৩ হাজার টাকা করে ভাতা দিয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে তাদের চিকিৎসা খরচও বহন করছে। ধোবাউড়া উপজেলার বীরমাতা বীরাঙ্গনা জেলেখা খাতুনকে ঢাকায় উন্নতমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে বিশেষ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যার সমস্ত ব্যয় বহন করছে নারীপক্ষ।

১০ জন বীরাঙ্গনাদেরকে অনুদান দেওয়ায়, ফুলপুর সাংবাদিক সমিতি নারীপক্ষকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানায়। দেশের সকল বীরমাতা বীরাঙ্গনাদেরকে খুঁজে বের করে সরকার অতিসত্বর গেজেটভূক্ত করে, তাঁদের সম্মানিত করুক সে আশা করছি।