‘সাত রাজার ধন’ পাওয়ার লোভে ৭৫ হাজার টাকা খোয়া গেল

ময়মনসিংহের ফুলপুরে কথিত জীনের বাদশার প্রতারণার শিকার হয়ে সাত রাজার ধন পাওয়ার লোভে ঋণ করে ৭৫ হাজার টাকা খোয়ালো রূপালী খাতুন (২১) নামে এক দিনমজুরের বউ। পরে কথিত সেই জীনের বাদশার বিরুদ্ধে জিডি করা হয়েছে। উপজেলার রূপসী ইউনিয়নের ঘোমগাঁও গ্রামের দিনমজুর রতন মিয়ার স্ত্রী রূপালী খাতুন রবিবার (৮ মে) বিকালে ওই জিডি করেন।

রূপালী জানান, গত ২৪ এপ্রিল আনুমানিক রাত ১২টার দিকে তার মোবাইল নাম্বারে একটা কল আসে।

ওপাশ থেকে বলে, ‘আমি জীনের বাদশা বলছি। তোমার নামে আল্লাহর তরফ থেকে অনেক সোনাদানা ও সম্পদ আইছে। স্বর্ণের মানিক সাত রাজার ধন আল্লাহ আমাকে দিয়ে তোমার জন্য পাঠাইছে। এখন এগুলো তুমি কিভাবে নিবা? আরেকটা বিষয় শোন, এ কথা কাউকে বলতে পারবানা।

এসময় বাদশা তাকে কসম করায়। পরে বলে- এই সম্পদ নিতে হলে একটা কাজ করতে হবে। আমাকে একটা জায়নামাজ হাদিয়া দিতে হবে। ‘
তিনি আরও জানান, আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি- আপনি এখন কোথায়? বলে, আমি বগুড়ায়।

এখানে না আসতে পারলে বিকাশ নাম্বারে জায়নামাজ বাবদ ৫৫০ টাকা পাঠিয়ে দাও। পরে রূপালী তাই করে। এরপর জীনের বাদশা বলে, আজকের মধ্যে তোমাকে আমি এই সম্পদ দিয়ে দিব। এটা নিতে হলে আরও কিছু খরচ করতে হবে। আৎরা, ল্যাংড়ারে কিছু শিরনী তাবারক খাওয়াতে হবে।

এরপর পাঠায় ৮৫০০ টাকা। তারপর বলে একটা কিছু কোরবানি করতে হবে। এই বাবদ ২১০০০ টাকা পাঠাতে হবে। পরে আমি বলে যে, আমার নিকট তো আর কোন টাকা নেই।

রূপালী জানায়, পাশে থেকে তার স্বামী রতনও এসব কথা শুনতেছিল কিন্তু সাত রাজার ধন পেতে যাচ্ছে বলে কারো মাথায় প্রতারণার বিষয়টি কাজ করেনি। জীনের বাদশা রূপালীকে ৩ দিনের জন্য ঋণ করতে বলে। বাদশা তাকে বলে- যদি তুমি এই ধন পাও তাহলে তো আর তোমার কোন অভাব থাকতেছে না। আগে ও পরের সকল ঋণ পরিশোধ হয়ে যাবে। এরপর রূপালী ঋণ করে তাকে আরও দুইবারে ২৫০০০ ও ২০০০০ করে সর্বমোট ৫ বারে ৭৫০০০ টাকা পাঠায়। টাকাগুলো পাঠানোর পর থেকে বাদশার ব্যবহৃত সব নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। এগুলোতে মোবাইল করলে আর ধরে না। পরে ধীরে ধীরে রূপালী ও তার স্বামী রতন মিয়া কথিত জীনের বাদশার প্রতারণা বুঝতে পারে। এরপর তিনি রবিবার ফুলপুর থানায় এসে রূপালী বাদি হয়ে জীনের বাদশার বিরুদ্ধে জিডি করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফুলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ ব্যাপারে একটি জিডি হয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো। এসময় ওসি পাবলিককে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন।