পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় প্রশিক্ষন না পেয়ে সিডার মেশিন বিক্রি করছেন কৃষকরা

দক্ষিনাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার কৃষকদের কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ৭০ শতাংশ উন্নয়ন সহায়তা (ভর্তুকি) দিয়েছে কৃষিবান্ধব সরকার।কিন্তু কৃষি অফিসের যোগসাজশে সরবরাহকারী কোম্পানির ডিলারের লোকজন কৃষকদের নিকট থেকে এসব কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।মঠবাড়িয়া থেকে কম মূল্যে নিয়ে যে সব এলাকায় ভর্তুকি নাই সেসব এলাকায় অধিক মূল্যে বিক্রি করে দিচ্ছে একটি অসাধু চক্র।

কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ের ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহায়তা (ভর্তুকি) প্রকল্প বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কঠোর নজরদারি রাখতে নির্দেশনা থাকলেও দেখা যায় এর উল্টো চিত্র। এসব কর্মকর্তাদের অবহেলায় অনেকটা প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে ভর্তুকি মূল্যের কৃষি যন্ত্রপাতি। তবে সাংবাদিকরা বিষয়টি খোঁজ খবর নেওয়ায় কিছুটা টনক নড়েছে কৃষি অফিসারদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টিয়ারখালী গ্রামের কৃষক মোঃ এনামুল হক দুলাল ২০ হাজার টাকায় সিডার মেশিনটি বিক্রি করে দিয়েছেন। এভাবে বেতমোরের কৃষক নাসির, ধানিসাফার কৃষক জলিল মৃধা, সাপলেজার কৃষক ইসমাইল সহ অর্ধ শতাধিক কৃষক সিডার মেশিন প্রাপ্তির কয়েকদিনের মধ্যেই বিক্রি করে দিয়েছেন। যদিও মেশিন নেওয়ার আগে প্রত্যেক কৃষক একটি চুক্তিপত্র সম্পাদন করেছে। যেখানে উল্লেখ রয়েছে দুই বছরের মধ্যে এটি বিক্রি করা যাবে না।

কৃষক ইসমাইল হোসেন জানান,আমার এলাকায় ৮/৯টি সিডার মেশিন পেয়েছে। অধিকাংশই বিক্রি করে দিয়েছে। কারন কেউ এ মেশিনের ব্যবহার জানে না।কৃষকরা প্রশিক্ষন পেলে হয়তো বিক্রি করতো না।

কৃষক মোতালেব পহলান জানান,আমার সিডার মেশিনটি কোম্পানির ডিলারের কাছে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি।মেশিন চালাতে পারি না। এজন্য বিক্রি করে দিয়েছি।

এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, প্রকৃত কৃষকরা কৃষি অফিস থেকে কোন উন্নয়ন সহায়তা পায় না। যারা পায় তাদের অধিকাংশই কৃষির সাথে জড়িত নয়।এদের মধ্যে কেউ শিক্ষক, কেউ সাংবাদিক, কেউ ব্যবসায়ী আবার কেউ জনপ্রতিনিধি।এমনটাও দেখা যায়,কৃষকের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে অফিস থেকে মেশিন ছাড়িয়ে তা অধিক লাভে বিক্রি করে দিয়েছে একটি চক্র।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ মনিরুজ্জামান জানান, মঠবাড়িয়া উপজেলায় এসিআই মটরস লিমিটেড এবং চিটাগং বিল্ডারস নামে দুটি কোম্পানি সিডার মেশিন সরবরাহ করেছে।একটি নতুন সিডারের মূল্য ৬০ হাজার টাকা। আর কৃষকদের দেওয়া হয়েছে ২০ হাজার টাকায়। কৃষকরা একটি দালাল চক্রের কাছে সিডার বিক্রি করছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।