কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে তীব্র শীতে

রোরো ধান চাষে দুশ্চিন্তায় কৃষক, তাপমাত্রা নেমেছে ৮ এর ঘরে

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে শৈত্য প্রবাহের কারণে তীব্র শীত আর কনকনে ঠান্ডায় চলতি মৌসুমের বোরো চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষক। কয়েক দিন থেকে সূর্যের দেখা নেই। তাপমাত্রা ৮ থেকে ৯ ডিগ্রির ঘরে ওঠানামা করছে। ঘন কুয়াশার দাপট না থাকলেও তীব্র ঠান্ডায় কাহিল হয়ে পড়েছে মানুষের পাশাপাশি পশু পাখিও। শীতের সাথে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় জবুথুবু হয়ে পড়েছে গোটা জনপদ।

সোমবার (২২ জানুয়ারি ) সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা গত রবিবার ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কনকনে শীতে স্বেচ্ছায় ঘর বন্দী হয়ে পড়েছে মানুষ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেও ঘর থেকে বাহির হচ্ছে না। ঠান্ডায় ঘরের বাইরে এক মুহুর্তও টেকা যাচ্ছে না। চলতি মৌসুমের বোরো চাষের জন‍্য কৃষি শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বিপাকে পড়েছেন কৃষক।

উপজেলার পাইকেরছড়া গ্রামের কৃষক কফিল উদ্দিন জানান, ৩ বিঘা জমি পানি- সার দিয়ে চাষ করে প্রস্তুত করেছি। কিন্তু দুই দিন থেকে ধানের চারা লাগানোর শ্রমিক পাচ্ছি না। জমির পানি শুকিয়ে গেলে পুনরায় চাষ দিয়ে কাদো করতে হবে। এতে খরচ আরো বাড়বে।

পশ্চিমছাট গোপালপুর গ্রামের কৃষক আব্দুস ছাত্তার জানান, হাই ব্রীড ধানের চারা ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে লাগাতে হয়। কিন্তু তীব্র ঠান্ডায় কৃষি শ্রমিক না পাওয়ায় জমিতে ধান লাগাতে পারতেছি না। চারার বয়স বেড়ে যাচ্ছে এবং শীতে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নে ১৬ হাজার ৪৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ‍্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ (সোমবার) পর্যন্ত ১ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে ধানের চারা লাগানো হয়েছে। মাসের শেষের দিকে তাপমাত্রা বাড়বে তখন সব স্বাভাবিক হবে এবং বোরো চাষের লক‍্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, আপাতত কোন ফসলের ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। স্থায়ী ভাবে যদি শৈত্য প্রবাহ বয়ে যায়, সেক্ষেত্রে ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে। যাতে কোন ফসলের ক্ষয়ক্ষতি না হয় জন‍্য আমরা কৃষককে নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।