পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়

ঝড়ো বাতাস ১০ মিনিটের, মাথায় হাত কৃষকের!

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বোরো চাষে বাম্পার ফলন হলেও মাত্র ১০ মিনিটের আচমকা কালবৈশাখীর ঝড়ো বাতাসে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পরেছেন চাষিরা। অধিক পরিশ্রমে অর্জিত ফসল ঘরে তোলার আগেই এখন কৃষকের বোরো ক্ষেতে অর্ধেক ধান চিটায় পরিনত হয়েছে। গত ৪ এপ্রিল (রোববার) দিবাগত রাতে ঝড়ো বাতাসের সাথে বয়ে যাওয়া গরম বাতাসে এমন সর্বনাশ হয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ফলে উৎপাদন খরচ তুলতে পারবেন কিনা তাই নিয়ে চরম হতাশায় রয়েছেন মৌসুমি চাষিরা।

তবে প্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

সরেজেমিনে ঘুরে দেখা যায় উপজেলার নীলগঞ্জ ইউপির বোরো ক্ষেতে বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে ক্ষেতের ধানের ছড়া হাতে ধরলেই সর্বনাশের চিহ্ন চোখে পড়ার মতো। অপরিপক্ক ধান ক্ষেতের প্রত্যেকটি ছড়ায় প্রায় অর্ধেকটাই লালচে-খয়রি রঙ ধারন করে চিটা হয়ে গেছে।

কৃষকরা বলছেন, আমনের কাঙ্খিত ফলন না পেয়ে ধানের ভাল দাম থাকায় বোরোর ব্যাপক আবাদ করেছিলেন তারা। এখন ফলন ভালো হলেও নতুন করে দারুন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বোরো চাষিরা।

কুমিরমারা গ্রামের চাষী সাইফুল্লাহ গাজী জানান, তিনি প্রায় সাড়ে তিন একর জমিতে ৭০ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ করে বোরো আবাদ করেছেন লাভের আশায়। এখন ক্ষেতের দিকে তাকাতে পারছেন না। ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছেন তিনি।

আরেক চাষি জাকির গাজী জানালেন, তার তিন একর বোরো ক্ষেতের প্রায় দুই একর চিটায় পরিনত হয়েছে, কিভাবে ক্ষতি পুষিয়ে উঠবেন বুঝতে পারছেন না।

একই দুরাবস্থায় কথা জানান চাষি সুলতান। তার ভাষ্যমতে প্রতিটা ছড়ায় ২৫০ থেকে প্রায় ২২০ টা ধান থাকে। তবে তার ক্ষেতেও এখন অর্ধেকটাই চিটা।
এছাড়াও তিনি জানান শুধু নীলগঞ্জ ইউনিয়ন নয়। একই দুরাবস্থা উপজেলার প্রতিটা ইউনিয়নের চাষীদের।

উৎপাদন খরচ ঘরে তুলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় পরেছেন অনেক বোরো চাষিরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, এবছর ১২ হাজার ৩৫০ একর জমিতে বোরো আবাদ করেছেন চাষিরা। যা গেল বছরের চেয়ে অন্তত ছয় গুন বেশি। ঝড়ো বাতাসের পাশাপাশি দীর্ঘ অনাবৃষ্টিতে তাপদাহের ফলে ঠিকমতো পরাগায়ন না হওয়া একটি কারণ। হিট ইনজুরির কারণে ফুল শুকিয়ে যাচ্ছে। তবে কৃষকদের ক্ষেতে পানি ছিটানোর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় ওষুধ ছিটানোর জন্য বলা হয়েছে।