চুয়াডাঙ্গায় গৃহবধূ নিজেই ভাঙলো সংসার; বুঝে নিল যৌতুকের মালামাল

সংসার কে বা ভাঙতে চায়। কোন নারীই চায় না তার ভেঙে যাক মধুর সংসার। শ্বশুর বাড়ী থেকে যদি নানা অত্যাচার করাও হয়। তারপরও বাঙালি নারীজাতি সব দুঃথ বেদনা ভুলে গিয়ে টিকিয়ে রাখতে চায় তার সংসার। কিন্তু যখন শ্বশুর বাড়ীর অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায় তখন সবকূল হারিয়ে বাধ্য হয়েই সাজানো সংসার ভেঙে ফেলতে বাধ্য হয় একজন গৃহবধূ।

তেমনই এক ঘটনায় শত দুঃখ কষ্ট নিয়ে সাজানো সংসার ভেঙে ফেলা হয়েছে যৌতুকলোভী স্বামীর পরিবারের অত্যাচারে।

আইনগতভাবে বিয়েতে যৌতুক নেয়া অপরাধ। তারপরও যৌতুক নিয়েও অত্যাচার নির্যাতন অব্যাহত রেখেছিল গৃহবধূ ফারহানার স্বামী বকুল মিয়াসহ তার পরিবার। অবশেষে স্ত্রী অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ফারহানা নিজেই ডিভোর্স দিয়ে যৌতুক নেয়া ঘরের শোকেজ, সাববা· ওয়ারড্রপসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ফিরিয়ে কড়াই গণ্ডায় বুঝে নিয়েছে গৃহবধূর পরিবার। এমন নতুনত্ব ঘটনার জন্ম দিলেও মনে কষ্ট নিয়ে স্বামী বকুল মিয়াকে ডিভোর্স দিল ফারহানা নামের ওই গৃহবধূ।

বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার নাটুদহে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামসহ সর্বসাধারণের উপস্থিতিতে ওই দম্পতির সংসার ভাঙার ঘটনা কার্যকর করা হয়।

বকুল মিয়া (২৬) উপজেলার ছাতিয়ানতলা গ্রামের হামিদ মিয়ার ছেলে ও ফারহানা খাতুন (২২) ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে।

এ বিষয়ে ফারহানার বাবা জানান, গত তিন বছর আগে আমার মেয়ের সাথে বকুলের বিয়ে হয়। দুই বছর সুখে শান্তিতে সংসার করে আসছিলো। কিন্তু বকুলের মা বাবার কাছে ফারহানা নানা অত্যাচারের শিকার হতে হয় সবসময়। তার মা-বাবাকে কয়েকবার বোঝানোর চেষ্টা করা হলেও কোন কর্ণপাত করেনি পরিবারটি। সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফির নিকট কয়েক দফা বিচার সালিশ করলেও কোন ফল হয়নি। অবশেষে মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমার দেয়া সমস্ত মালামালসহ বিচারকার্যে যৌতুকের নগদ কুড়ি হাজার টাকা বুঝে নিয়ে সসম্মানে ডিভোর্স নেয়া হয়েছে।

সেসময় নাটুদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফি, প্যানেল চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি, ইউপি সদস্য শাখাওয়াত, খলিলুর রহমান, ছানারুল হোসেন, বশির আহমেদ, কেরামত আলী, মনিরুল ইসলাম, আনিছুর রহমান, লাকি খাতুন, বেলি খাতুন। সেসময় সমস্ত মালামাল বুঝিয়ে দেন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব রায়হান মাহমুদ।