চুয়াডাঙ্গায় সূর্যের মানবতা নেই; খাঁ খাঁ করছে যানজট শহর

দীর্ঘদিন ধরে অর্থনীতি সঙ্কটসহ নানা সঙ্কটের মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছে দেশ। ফলে মানুষের জীবনযাত্রা এখন কঠিন হতাশায় পরিণত হয়েছে। জীবন চালানোই যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচার মতো অবস্থা বিরাজ করছে। রাষ্ট্র পরিচালনার মহা ব্যর্থতায় মানুষের জীবন আজ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। জীবনে বেঁচে থাকার আশাটাকাও হারিয়ে যাচ্ছে দিন দিন।

এরমধ্যেই বৈশাখ মাষের চাপা ভ্যাপসা গরমের চাঁদরে ঢেকে রয়েছে চুয়াডাঙ্গা। গরমের তাপদাহে বাইরে বের হওয়াও আতঙ্ক হয়ে উঠেছে। বৈশাখের এই চলমান সময়ে ৩৯ থেকে ৪০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত গরমের পারদ ওঠানামা করছে চুয়াডাঙ্গায়। আর ওই ডিগ্রি খরতাপের কারণে সূর্যের শক্তি শরীরের চামড়ায় যেনো আঘাত করছে। কর্মযজ্ঞতাও নষ্ট করে ফেলছে। দেশের এই কঠিন দুঃসময়ের মধ্যেও গরমের কষ্টে অস্বস্তিতে জীবনযাপন করছে মানুষ। মানুষের জীবনযাত্রা একাকার হয়ে পড়েছে। সবথেকে বিপদে পড়েছে রিক্সা, ভ্যান-সিএনজিসহ বিভিন্ন পেশার খেটে খাওয়া মানুষ। রোদ্রের চামড়াজ¦লা খরতাপে তারা কর্মে বের হলেও রাস্তা খা খা করায় সারাদিন কষ্টের অনুভূতি পেলেও আয়ের দেখা মিলছে না। ফলে দেশের এই কঠিন দুঃসময়ে ঊর্ধ্বগতির দ্রব্যমূল্যের ধাক্কায় মানুষ প্রতিনিয়তই আহত হচ্ছে মানুষ।
এদিকে, আজ (১৮ এপ্রিল) বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ৩৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা বিরাজ করেছে। বিকাল ৩টার দিকে তা বেড়ে ৪০.৪ ডিগ্রি সেলিয়াসে পতিত হয়েছে। দিন কিংবা রাত অসহ্য গরম নিয়ে অস্বস্তিতে সময় পার করছে মানুষ।

এদিকে, তীব্র তাপদাহে হিট এলার্ট জারি করেছে জেলা প্রশাসন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে রজমান আলী নামের এক রিক্সাচালক বলেন, চুয়াডাঙ্গায় যে গরম পড়ছে, পায়ে ঠেলে রিক্সা চালানো অসাধ্য ব্যাপার হয়ে পড়েছে। রোদের তাপে শরীরের চামড়ার কাছে মনে হচ্ছে সূর্যটাই চলে এসেছে। খরতাপের ভয়ে মানুষও আসছে না বাজারে। সে কারণে ইনকামও হচ্ছে না। সারাদিন যা ইনকাম হচ্ছে তা দিয়ে বাজারে ঢোকার সাহস হচ্ছে না। এমন অবস্থা চলতে থাকলে একদিকে যেমন গরমে অস্বস্তি অন্যদিকে নিত্যপণ্যের গাজ¦লা দামে কুপোকাত হয়ে পড়ছি আমরা।
ফুটপাতে বসে জুতা সেলাইকারী স্বদেশ কুমার বলেন, আমাদের আয়ের স্থান খালি জায়গায়। ফুটপাতে বসেই ইনকাম করে আমাদের জীবন চালাতে হয়। কয়েকদিন ধরে গরমের চোটে আমরা ফুটপাতেও বসতে পারছি না। সূর্যের বেকায়দা গরমে স্থান ছেড়ে ছায়ায় বসে থাকতে হচ্ছে। যে বড় বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে যানজটের স্বর্গরাজ্য, সেই মোড়ও খাঁ খাঁ করছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর কিছুটা মানুষ দেখা গেলেও সারাদিন বসে বসেই দিন কাটছে আমাদের। সঠিকভাবে ইনকাম না হওয়ায় আমরা সংসার চালাতেও খুবই কষ্ট পাচ্ছি। এখনও গরমের অনেক সময় রয়েছে। আগামী দিনগুলি যে কেমন যাবে খুব চিন্তাই আছি।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, আরও কয়েকদিন এমন তাপমাত্রা অব্যহত থাকতে পারে। তবে, এখনই বৃষ্টির কোনো সম্ভবনা নেই।