চুয়াডাঙ্গা থানা এলাকায় ৩টি মার্কেটে দুর্ধর্ষ চুরি! আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা

সমাজে ছোট বড়সহ বিভিন্ন অপরাধ যখন বেড়ে যায়, তখন ঠিক বোঝাই যায়—কি কারণে সমাজের এমন অবক্ষয়। রাষ্ট্রীয়গতভাবে বিভিন্ন অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই অন্যতম। কিন্তু এ বাহিনীকে তোয়াক্কা না করে অপরাধীরা সরব রয়েছে। যার কোনো শেষ নেই বরং চলমান। আর সে কারণে চুরি ডাকাতি ছিনতাই মারামারিসহ বিভিন্ন অপরাধ ফুটে রয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। তারমধ্যেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় অপরাধ দমনে কর্মব্যস্ততাও বাড়িয়ে তুলেছে। যার দরুণ চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ খুলনা বিভাগের শ্রেষ্ঠ হচ্ছে বারবার। শুধু তাই—ই নয় অপরাধ দমনে জেলার শ্রেষ্ঠ ওসিরা নির্বাচিত হন প্রায় প্রায়ই। কিন্তু সেই শ্রেষ্ঠত্বের সুফলকে গুড়িয়ে দিচ্ছে অপরাধীরা।

তারই অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গার মূল শহরের মেইন সড়কের সাথেই গড়ে ওঠা ৩টি মার্কেটের মোট ৮টি দোকানে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে চোরচক্র।

এ ঘটনায় প্রায় নগদ ৭ লক্ষাধিক টাকাসহ স্বর্ণালংকার চুরি হয়ে গেছে বলে দাবি করেছে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে পেঁৗনে ৯টার মধ্যে একইসাথে থানা এলাকার স্বর্ণপট্টি, ফাতেমা প্লাজা ও গলির মার্কেটে এমন দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটায় অপরাধীরা।

এ ঘটনার খবর তড়িঘড়ি করে বেলা পেঁৗনে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলগুলো পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামানসহ পুলিশের উধ্বর্তন কর্মকর্তারা। তবে মার্কেটের সিসিটিভি ক্যামেরায় বন্দী হয়ে যায় চুরির দৃশ্য।

এদিকে, চুরি হওয়া দোকানগুলো চুয়াডাঙ্গা সদর থানা এলাকায় মার্কেটগুলো অবস্থিত হওয়ায় যেমন আতঙ্ক বেড়েছে ব্যবসায়ীদের মাঝে তেমনি বিরাট দুঃখজনক ব্যাপার বলে জানিয়ে স্থানীয়রা।

দুর্ধর্ষ এ চুরি যাওয়া দোকান মালিকদের কিছু কিছু ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সংস্থা থেকে লোনে ব্যবসা পরিচালনা করায় হতাশ হয়ে পড়েছে সেসকল ব্যবসায়ীরা।

চুরি হওয়া দোকানগুলোর মধ্যে—আরিফ কম্পিউটারের ক্যাশ ভেঙে নগদ আড়াই লাখ টাকা, কম্পিউটার ক্লিনিকের ক্যাশ থেকে ১ লাখ ৮ হাজার টাকা, সদর থানার সামনে অঙ্কুশ জুয়েলার্স থেকে ১ ভরি ১২ আনা স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ২৭ হাজার টাকা, মুন্সি সুপার মার্কেটের মিম—বনি শাড়ী কালেকশন থেকে ১ লাখ সাড়ে ৯হাজার টাকা, ইরানি টেইলার্স থেকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা এবং পুরাতন গলির মনিরা সুপার মার্কেটের নন্দলাল গার্মেন্টস থেকে ৫০ হাজার, সুগন্ধা প্লাজার মারুফ গার্মেন্টেস থেকে ৪ হাজার টাকা, হবি বোরকা হাউজ থেকে ৫ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায় চোরচক্রের সদস্যরা।

একই সময়ে শহরের আলী হোসেন মার্কেটেও চুরির চেষ্টা চালায় চক্রের সদস্যরা। এসময় ঝিলমিল ইলেকট্রনিক্স ও ডাচ্ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকে তালা ভেঙে চুরির চেষ্টা চালায় তারা। পরিস্থিতি অনকূলে না থাকায় এখানে চুরির ঘটনা ঘটাতে ব্যর্থ হয়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানায়, প্রতিদিনের মতো রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়িতে যায় তারা। এরপর মার্কেটের নৈশপ্রহরীরা সারারাত প্রহরায় থাকে। সকালে প্রহরীরা চলে গেলে সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এ চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে চোরেরা। ফকফকা আলোয় পরিকল্পনার এমন দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা সদর থানার প্রাণকেন্দ্রে হওয়ায় নিরাপত্তা নিয়েও আতঙ্কগ্রস্থ চুয়াডাঙ্গাবাসী।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান জানান, কয়েকটি মার্কেটে চুরির ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে পুলিশের একাধিক ইউনিট কাজ শুরু করেছে। দ্রুতই প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। সেসময় তিনি মার্কেটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়।

গতকাল রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাব্বুর রহমান জানান, এ ঘটনায় এখনো কেউ মামলা দায়ের করেনি। তবে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে সফল অভিযানের মাধ্যমে চোরচক্রকে ধরতে মাঠে নেমেছে পুলিশ। দ্রুতই এ ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।