চুয়াডাঙ্গায় শিক্ষকের বাড়িতে ছাত্রদের মল ও আতশবাজি নিক্ষেপ

শিক্ষাসমাজ আজ কোথায় ঠেকেছে সেকথা ভাবতে গেলে সরকারের দায় কিন্তু এমনিভাবেই উঠে আসে। তারপরও আজকের শিক্ষার্থীরা শিক্ষার মর্যাদা কি শিক্ষা আমাদেরকে কি কি শেখাতে সাহায্য করে তা আমরা ভুলে গেছি।

তবে একজন শিক্ষার্থীর সকল উচ্ছৃঙ্খলতা শিক্ষকের প্রতি সম্মান ইভটিজিংসহ নানা অনিয়মসহ অসামাজিক কাজ আজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশি। আর সেসকল শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও পারিবারিক সুশিক্ষা না থাকায় উচ্ছৃঙ্খল কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের যত অপরাধ দিন দিন বেড়েই চলেছে।

তারই অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাড়াগোদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষার্থীরা রাতেই ওই শিক্ষার্থীরা খাড়াগোদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হারুন অর রশিদের নিজ বাড়ীতে রাতের আধারে দুই প্যাকেট আতশবাজি নিক্ষেপ করেন। সেইসাথে গোবরের মল ও শিক্ষার্থীরা নিজেদের মল কচু পাতার মাধ্যমে শিক্ষকের বাড়িতে নিক্ষেপ করেছে।

জানাগেছে, সদর উপজেলার খাড়াগোদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সকাল পৌঁনে ১০টায় ক্লাস শুরু হয়। সকালে ৯টা ৪০ মিনিটে ভোকেশনাল বিভাগের শিক্ষার্থীরা শ্রেণি কক্ষে আতশবাজি ও পটকা নিক্ষেপ করে।

এদিন গতকাল সোমবার ২৫শে মার্চ গণহত্যা দিবস ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ম্যানেজিং কমিটির নিয়মিত মিটিংয়ে এক সদস্য শিক্ষার্থী কর্তৃক খাড়াগোদা চিত্রা নদীর ওপর ব্রিজে মেয়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে ইভটিজিংয়ের শিকার হয় সে বিষয়টিও তুলে ধরা হয়।

সেসময় এক শিক্ষক জানান, আজ (রবিবারও) শ্রেণি কক্ষে দুইটা আতশবাজি ও পটকা ফোটানো হয়েছে। সভাপতির নির্দেশে বিদ্যালয়টির শিক্ষক হারুন অর রশিদ, জাহিদুল ইসলাম ও আবজুল ইসলাম ভোকেশনাল বিভাগের নবম ও দশম শ্রেণির কক্ষে গিয়ে শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আতশবাজি ফোটানো শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করে সভাপতির কাছে নিয়ে আসা হয়।

সেসময় ওই শিক্ষার্থীরা এ অন্যায়মূলক কাজের কথা স্বীকার করেন এবং আগামীতে এমন কাজ করবে না বলেও শপথ করেন।

এ বিষয়ে শিক্ষক হারুন অর রশিদ জানান, কিছুদিন আগে শিক্ষার্থীরা এমন কান্ড ঘটিয়েছে। গতকালের ঘটনার পরই আমি তিতুদহ পুলিশ ক্যাম্পে বিষয়টি অবহিত করেছি।

কোনো শিক্ষার্থীকে তিনি চিনতে পেরেছিলেন নাকি এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভোকেশনাল শাখার নবম শ্রেণির ছাত্র সৌরভ, দশম শ্রেণির মিরাজ, অষ্টম শ্র্রেণির আশিক, রিহাজ, রাব্বি, ইয়ামিন, আলিফ, মাহফুজ ও শাওন নামের ৯ শিক্ষার্থীকে শনাক্ত করে তিনি প্রতিষ্ঠান বরাবর অভিযোগ করেন।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৯ শিক্ষার্থীকে মৌখিকভাবে প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কার বিষয়ে খাড়াগোদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাহারুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, মৌখিকভাবে ৯ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ (২৬ মার্চ) মঙ্গলবার ম্যানেজিং কমিটির মিটিংয়ে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন বলেন, গত রবিবার আমি বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকাকালিন সময়ে পটকা ফোটানোর ঘটনা ঘটে। আমি তিন শিক্ষককে বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য মৌখিক নির্দেশনা দিলে তারা অভিযুক্ত ৯ শিক্ষার্থীকে আমার সামনে নিয়ে আসেন। শিক্ষার্থীরা ভুল স্বীকার করলে আমি তাদের সাধারণ ক্ষমা করে দিই।

এরপরই ওই শিক্ষার্থীদের চার্জ করা শিক্ষক হারুন অর রশিদের বাড়ীতে রাতে নিজেদের মল-গোবর, পটকা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটিয়েছে। এটা আসলে ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এ বিষয়ে আমরা বিদ্যালয়ে একটি সভা করবো। এরপর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।