রংপুর বিভাগে ভোটার বেড়েছে ১৭ লাখ ৪ হাজার ৮১৯জন

# মোট ভোটার ১ কোটি ৩২ লাখ ৯৯৯৬২ জন
# পুরুষ ৬৬৪৮৮২ জন, নারী ৬৬৫১০৪১ জন
# তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৯৭ জন
# তিন জেলায় থাকবে অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র
# ভোটকেন্দ্র বেড়েছে ১৯৮

রংপুর বিভাগে ভোটার বেড়েছে ১৭ লাখ ৪ হাজার ৮১৯ জন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ৩৩টি সংসদীয় আসনে ভোটার সংখ্যা ১ কোটি ৩২ লাখ ৯৯ হাজার ৯৬২ জন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এসব আসনে ভোটার সংখ্যা ছিল ১ কোটি ১৫ লাখ ৯৫ হাজার ১৪৩ জন। বিগত নির্বাচনের চেয়ে এবার ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বেড়েছে ১৯৮টি।

রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে প্রস্ততি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। এরই মধ্যে ভোটার তালিকা প্রস্তুতের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ভোটার তালিকা অনুযায়ী এসব আসনে পুরুষ ভোটার রয়েছে ৬৬ লাখ ৪৮ হাজার ৮২৪ জন এবং নারী ভোটার ৬৬ লাখ ৫১ হাজার ৪১ জন। রংপুর বিভাগে পুরুষের তুলনায় ২ হাজার ২১৭ জন নারী ভোটার বেশি। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে ৯৭ জন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪ হাজার ৪৯৪টি ভোটকেন্দ্র ব্যবহার করা হয়েছিল। আসন্ন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র বেড়ে ৪ হাজার ৬৬৮টি নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও দিনাজপুর জেলায় একটি করে অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র থাকবে বলে জানা গেছে।
রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করছেন। ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। প্রার্থীরা সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ছবিসহ ভোটার তালিকা সংগ্রহ করছেন।

এদিকে সংসদীয় আসনের মধ্যে রাজারহাট, ফুলবাড়ি ও সদর উপজেলা মিলে কুড়িগ্রাম-২ আসনে বিভাগের সর্বোচ্চ ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৩২ জন এবং জলঢাকা উপজেলা নিয়ে নীলফামারী-৩ আসন বিভাগের সর্বনিম্ন ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭৬ হাজার ১৭৭ জন। আসন ভিত্তিক ভোটার সংখ্যার মধ্যে
ঠাকুরগাঁও-১ (সদর) আসনে ৪ লাখ ৮১ হাজার ৮৫৯ জন, ঠাকুরগাঁও-২ (বালিয়াডাঙ্গী, হরিপুর ও রানীশংকৈল) আসনে ৩ লাখ ১৮ হাজার ৬২০ জন, ঠাকুরগাঁও-৩ (পীরগঞ্জ ও রানীশংকৈল) আসনে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ১২৫ জন। দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ ও কাহারোল) আসনে ৩ লাখ ৯২ হাজার ৪৪৮ জন।

দিনাজপুর-২ (বোচাগঞ্জ ও বিরল) আসনে ৩ লাখ ৩২ হাজার ৬৫৯ জন, দিনাজপুর-৩ (সদর) আসনে ৩ লাখ ৯২ হাজার ৪৯৫ জন, দিনাজপুর-৪ (খানসামা ও চিরিরবন্দর) আসনে ৩ লাখ ৯৮ হাজার ১১৪ জন, দিনাজপুর-৫ (পার্বতীপুর ও ফুলবাড়ি) আসনে ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৮১, দিনাজপুর-৬ (নবাবগঞ্জ, বিরামপুর, হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট) আসনে ৫ লাখ ২৫ হাজার ৫০৯ জন।

পঞ্চগড়-১ (সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী) আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩২ জন, পঞ্চগড়-২ (দেবীগঞ্জ ও বোদা) আসনে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৯৪৬ জন।

নীলফামারী-১ (ডিমলা ও ডোমার) আসনে ৪ লাখ ৩০ হাজার ২৮২ জন, নীলফামারী-২ (সদর) আসনে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৯৯২ জন, নীলফামারী-৩ (জলঢাকা) আসনে ২ লাখ ৭৬ হাজার ১৭৭ জন, নীলফামারী-৪ সৈয়দপুর ও কিশোরগঞ্জ) আসনে ৪ লাখ ২৬ হাজার ৯৭৩ জন। লালমনিরহাট-১ (পাটগ্রাম ও হাতিবান্ধা) আসনে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৯৫২ জন, লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী ও কালিগঞ্জ) আসনে ৪ লাখ ১ হাজার ৬৫৭ জন, এবং লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসনে ২ লাখ ৮৫ হাজার ৩৮৭।

রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া ও আংশিক সিটি কর্পোরেশন) আসনে ৩ লাখ ৩২ হাজার ৪৬ জন, রংপুর-২ (বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ) আসনে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৫৯২ জন, রংপুর-৩ (সদর) আসনে ৫ লাখ ১৯ হাজার ৯৭০ জন, রংপুর-৪ (পীরগাছা ও কাউনিয়া) আসনে ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ জন, রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৩৪৭ জন, রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনে ৩ লাখ ২৯ হাজার ১৫ জন।

কুড়িগ্রাম-১ (ভুরুঙ্গামারী ও নাগেশ্বরী) আসনে ৫ লাখ ২৮ হাজার ৯৫৩ জন, কুড়িগ্রাম-২ (রাজারহাট, ফুলবাড়ি ও সদর) আসনে ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৩২ জন, কুড়িগ্রাম-৩ (উলিপুর) আসনে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৯১৫ জন, কুড়িগ্রাম-৪ (রৌমারী, চর রাজিবপুর, চিলমারী ও উলিপুর) আসনে ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৭৮৮ জন। গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে ৩ লাখ ৯১ হাজার ৪৬০ জন, গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনে ৩ লাখ ৮০ হাজার ৩৩৪ জন, গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাহপুর ও পলাশবাড়ি) আসনে ৪ লাখ ৭৩ হাজার ৫১৭ জন, গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে ৪ লাখ ৩৮ হাজার ২৭৩ জন, গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি ও সাঘাটা) আসনে ৩ লাখ ৬১ হাজার ১৬৯ জন।

এদিকে শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের সভাকক্ষে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা। যথাসময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়েছেন ইসি রাশেদা। তিনি বলেন, ভোটের তারিখ পেছানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য মিডিয়ার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য মিডিয়ার সহযোগিতা প্রয়োজন।আরও বলেন, ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মাঠপর্যায়ের প্রশাসনও এসব বিষয়ে বেশ আন্তরিক আছে। আগে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোট আদায়ের চেষ্টা করা হতো। সেখানে কোনো শাস্তির বিধান ছিল না। এখন ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করলে তাকে শাস্তির আওতায় আনার বিধান রয়েছে।এখন কেউ ভোটারদের রাতের আধারে ভয়ভীতি প্রদর্শন করলে নিকটতম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর জন্য আহ্বান জানান তিনি।

উল্লেখ্য , নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর এবং নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত চলবে। ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। সংসদ নির্বাচনের জন্য ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ৫৯২ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে।