চুয়াডাঙ্গায় একসাথে দোয়েল-কোয়েল-ময়না টিয়া’র জন্ম

চুয়াডাঙ্গার এক ছেলে সন্তানের পর আবারও একসাথে জমজ চার কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে কল্পনা খাতুন (২৮) নামের এক গৃহবধূ।

মঙ্গলবার (০৯ মে) রাতে চুয়াডাঙ্গা আঁখিতারা জেনারেল ক্লিনিক অ্যান্ড হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মায়ের গর্ভে থেকে ভূমিষ্ঠ করা হয় জমজ চার কন্যা সন্তানকে।
কল্পনা খাতুন দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের বিষ্ণপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ার রাজমিস্ত্রী মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী। তাদের সংসারে নাঈম নামে ১০বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, জমজ চার কন্যা সন্তান হওয়ায় বাবা-মাসহ তাদের পুরো পরিবার খুশি হলেও জীবনযাত্রা রিয়ে নানা চিন্তায় পড়েছেন পরিবারটি।

তিনি দরিদ্র হওয়ায় ক্লিনিকের বিল মেটানোর মতো সামর্থ্য নেই বলে জানান, চার জমজ শিশুর বাবা দিনমজুর মাহবুবুর রহমান।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মত গরীবের ঘরে চার জমজ কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়ায় যা টাকা ছিল সিজার অপারেশন করার আগে ওষুধপাতি ও বিভিন্ন সামগ্রী কিনতেই সব শেষ হয়ে গেছে। ক্লিনিকের বিল ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। এখন বড় চিন্তায় পড়ে গেছি। আমার স্ত্রীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। রক্ত জোগাড় করতেও এখন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
আঁখি তারা জেনারেল হাসপাতালে স্বত্বাধিকারী ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চার কন্যাসন্তানের জন্ম হয়েছে। নবজাতক চার শিশুসহ মা সুস্থ রয়েছে। প্রসূতির রক্তরক্ষণ হওয়ায় চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন বলেন, চার কন্যাসন্তান হাসপাতাল তত্ত্ববধায়নে আছে। তারা কিছুটা অপুষ্ট। অক্সিজেন ছাড়াই বর্তমানে সুস্থ রয়েছে। তাদের মায়ের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে জেনেছি। তিনি আরও বলেন, এর আগেও জমজ বাচ্চা দেখেছি। একসঙ্গে তিনটা বাচ্চা জন্মগ্রহণ কমবেশি দেখা ও শোনা যায়। তবে একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম খুবই কম জন্ম হয়।

এদিকে, গরীবের ঘরে একসঙ্গে জমজ চার কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়ায় তাদেরকে দেখতে যান জেলা প্রশাসন আমিনুল ইসলাম খাঁন। বুধবার (১০ মে) ওই ক্লিনিকে দেখতে যান এবং জমজ শিশুদের নাম রেখেছেন জেলা প্রশাসক। সেসময় তাদেরকে ফুলদিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি নগদ ১০ হাজার টাকা প্রদান করাসহ মিষ্টিমুক করানো হয়।

সেইসাথে গরীব পরিবারের চিকিৎসার সমস্ত খরচ বিনামূল্যে প্রদান করার জন্য ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে জানান জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খান। পরে দম্পতির অনুরোধে (দোয়েল কোয়েল ময়না ও টিয়া) নামকরণ করে জমজ চার কন্যা শিশুর নাম রাখেন জেলা প্রশাসক।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের গাইনী চিকিৎসক অস্ত্রেপচারের মাধ্যমে চার জমজ কন্যা সন্তানকে গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ করান। তারা সবাই সুস্থ আছেন বলে জানান তিনি। পরবর্তীতে এক্ষেত্রে চিকিৎসার প্রয়োজন হলে জেলা প্রশাসন থেকে প্রদান করা হবে বলে তিনি জানান।