চুয়াডাঙ্গায় জাতীয় পত্রিকার সম্পাদক হাসেম রেজার বিরুদ্ধে নির্যাতিতদের মানববন্ধন

চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের আওয়ামী লীগের এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশি ও দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক হাশেম রেজার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করা হয়েছে।
সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মারামারি, হাতুড়ি পিঠা, ঘর-বাড়ি ভাংচুর, মানুষ হত্যা চেষ্টার অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ন্যায় বিচারের দাবিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

আজ (০৬ জুলাই) বৃহস্পতিবার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা প্রেসক্লাবের সামনে কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের সর্বস্তরের নির্যাতিত মানুষ ও স্বজনরা এ মানববন্ধন করে।

সেসময় হাসেম রেজাকে গ্রেফতার ও সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান মানববন্ধনকারীরা। কুড়ুলগাছি ইউনিয়ন আ.লীগের সহ-সভাপতি কাফিউদ্দিন টুটুল, সাংবাদিক শিমুল রেজা, মাসুদ রানা, কফিল উদ্দিনসহ অনেক গণ্যমান্যবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধন থেকে ভুক্তভোগীরা জানায়, হাশেম রেজা ঈদুল আজহা উপলক্ষে তার নিজ বাড়ি কুড়–লগাছি গ্রামে আসে। তিনি রোববার (০২ জুলাই) কুড়ালগাছি আদর্শ কৃষি সমবায় সমিতির মিটিং করা নিয়ে সরাসরি বিরোধের সৃষ্টি হয় একই গ্রামের দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক নুর হাকিমের সাথে। তিনিও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ ঘটনায় গ্রামে গ্রামে রাজনৈতিকভাবে আধিপত্য বিস্তার ধরে রাখতে দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক হাশেম রেজা তার লোকজন নিয়ে সংঘর্ষের মধ্যে জড়িয়ে পড়ে।

এতে আহত হয় কুড়ূলগাছি গ্রামের মাসুদ রানা (৪৫) আব্দুল (৪০) বকুল (৩৫) রিপন (৫০)। সেসময় আরাফাত নামের একজনের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে।

এছাড়া স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক শিমুল রেজাকে সোমবার (০৩ জুলাই) দুপুর ৩টার দিকে কার্পাসডাঙ্গা বাজার থেকে হাশেম রেজা ১০-১২ জন লোক অপহরণ করে তুলে নিয়ে যায় তার বাড়ি। পাশে তার সার গোডাউনের মধ্যে শিমুল রেজার হাত-পা বেঁধে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। পরে খবর পেয়ে সন্ধ্যায় সঙ্গীয় ফোর্সসহ দর্শনা থানা অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) অপারেশন নীরব হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিমুল রেজাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আনা হয়। তবে তার মোবাইলফোনটি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় সরাসরি হাসেম রেজা তার দলবলদের নিয়ে ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।

এ ঘটনায় শিমুল রেজা বাদী হয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে দামুড়হুদা থানা একটি অপহরণ ও নির্যাতন মামলা দায়ের করেছে।

এ বিষয়ে হাসেম রেজা বলেন, আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নুর হাকিম অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ কারণে কিছু বিশৃঙ্খলা ঘটেছে। তার জন্য নুর হাকিম দায়ী। আমি তার বিরুদ্ধে ৬০ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন।

এ বিষয়ে দৈনিক সকালের সময়ের সম্পাদক ও প্রকাশক নুর হাকিম বলেন, হাশেম রেজা ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে দুইটা পত্রিকার সম্পাদক হয়েছে। রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। তার বাবা একজন জামায়াতের কর্মী ছিলো। বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত আছে সে। গ্রামে এসে সাধারণ মানুষের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আধিপত্য বিস্তার করতে চাচ্ছে। তবে আমার সাথে তার কোন ব্যক্তিগত দ্ব›দ্ব নেই।

দর্শনা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, শিমুল রেজাকে তুলে নিয়ে অপহরণ করেছে ঘটনা শুনে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গেলে সাংবাদিক হাসেম রেজা পুলিশকে বলেন, তাদের বিরোধের নিষ্পত্তির জন্য চেষ্টা চলছে। সেসময় শিমুল রাজা তার দাদা তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়।