পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় মনিকো গুচ্ছগ্রামে গড়ে উঠেছে পারিবারিক পুষ্টি বাগান

‘দেশের এক ইি জমিও অনাবাদি থাকবে না’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার মনিকো গুচ্ছগ্রামে গড়ে উঠেছে পারিবারিক পুষ্টি বাগান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ‘পারিবারিক পুষ্টি বাগান’ স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করেছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর বিভাগ। ফলে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে দিন দিন জনপ্রিয়তা লাভ করছে পারিবারিক বিষমুক্ত সবজি পুষ্টি বাগান।

বসতবাড়ির আঙিনা ও পরিত্যক্ত জায়গায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্পের আওতায় ও ব্যক্তি উদ্যোগে কৃষকরা বাড়ির উঠানে সবজি চাষ করছেন। বিনামূল্যে সবজি বীজ পেয়ে কৃষকরা বাড়ির উঠানে চাষকৃত সবজি যেমন পরিবারের চাহিদা পূরণ করছে, তেমনি সবজি বিক্রি করে স্বচ্ছলতার মুখ দেখছে দরিদ্র পরিবারের লোকজন।

জানা যায়, উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের মনিকো গুচ্ছগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৪৩টি পরিবার বসবাস করছেন। মনিকো গুচ্ছগ্রামের ৩টি বসত ঘরের আঙ্গিণায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে। আরও ৫/১০টি পরিবারের আঙ্গিণায় পুষ্টি বাগান স্থাপনের প্রস্তুতি চলছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রত্যেক পরিবারকে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের সবজির বীজ, সার, ফলের চারা, বীজ সংরক্ষণের পাত্র, বাগানে পানি দেওয়ার ঝাঝরিসহ অন্যান্য সব উপকরণ বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে।

উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের মনিকো গুচ্ছগ্রাম সমবায় সমিতির সম্পাদিকা মোছা. লাবলী বেগম বলেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোজাম্মেল ভাইয়ের পরামর্শে বাড়ির উঠানে ফাঁকা জায়গায় সবজি বাগান তৈরি করেছি। পুষ্টি বাগান থেকে আমার নিজের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে আশেপাশের মানুষকে শাক-সবজি দিচ্ছি। এ ছাড়া বাজারে বিক্রি করে বাড়তি টাকাও আয় করছি। এতে আমার শতকরা ৮০ভাগ লাভ হচ্ছে।

মনিকো গুচ্ছগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা কমিরুল হক ও মোছা. রহিমা খাতুন বলেন, উঠানের পতিত জায়গায় কৃষি অফিসের সহযোগিতায় সবজির বাগান করি। আমাদের সবজি বিষমুক্ত হওয়ায় বাজারে চাহিদাও অনেক বেশি। মনিকো গুচ্ছগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্পের আশপাশের লোকজনও বাড়ি এসে সবজি কিনে নিয়ে যায়।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন এক ইি জমিও খালি রাখা যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশব্যাপী পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের দায়িত্ব পালনে কৃষকদের পুষ্টি বাগান স্থাপন ও বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে সব সময় সহযোগিতা করা হচ্ছে। এতে কৃষকের নিজের যে পুষ্টি দরকার তাঁরা তাদের বাগানে উৎপাদন করে সেই পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারছেন।

একই সঙ্গে শাক-সবজি উৎপাদন করছে সেটা বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করতে পারছে।

তিনি আরোও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার মনিকো গুচ্ছগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্পে পারিবারিক পুষ্টি বাগান প্রদর্শনী গড়ে তুলতে পেরে খুবই ভালোই লাগছে। পারিবারিক পুষ্টি বাগান প্রদর্শনী কৃষক-কৃষাণীদের পিছনে অনেক সময় দিতে হচ্ছে। আশা করছি পর্যায়ক্রমে প্রতিটি পরিবারের আঙ্গিণায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হবে। এছাড়াও উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে অনাবাদি জমি ও বাড়ির আঙ্গিণায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান প্রদর্শনী পর্যায়ক্রম ও স্থাপন করার কাজ করছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।