তেঁতুলিয়ায় কার্তিকেই নেমে এসেছে আষাঢ়-শ্রাবণ

দেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় কার্তিকেই নেমে এসেছে আষাঢ়-শ্রাবণ। সাগরের লঘুচাপের কারণে উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী এই উপজেলায় দুদিন ধরে ঝরছে টানা বৃষ্টি। এই কারণে ঘরবন্দী হয়ে পড়েছে মানুষ। বাইরে যেতে না পারায় চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষগুলো।

মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) রাত থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির পাশাপাশি ঝড়ছে মুষলধারে বৃষ্টি। ঘর থেকে বের হওয়ার সুযোগ না থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে দিন মজুর, পাথর শ্রমিক, ভ্যান-রিক্সা চালক থেকে অনেক পেশাজীবিরা। আর এ বৃষ্টিতে ফসল, আমন বীজতলা নষ্ট হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরাও। বুধবার (২০ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মুষলধারে বৃষ্টিতে জনসাধারণকে ঘর বন্দি থাকতে দেখা গেছে। প্রয়োজনের তাগিদে বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রয়োজনীয় কাজ সারতে বের হয়েছেন অনেকেই। বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে অনেককেই হাটবাজার, অফিস আদালতে যেতে দেখা গেছে।

চার্জার চালিত ভ্যান চালক আব্দুল গফুর জানান, দুদিন ধরে দিনভর বৃষ্টিতে ভ্যান চালাতে পরছেন না তিনি। ঘর থেকে কেউ বের না হওয়ায় প্যাসেঞ্জার নাই, কামাইও নাই তার। হামিদুল, বেল্লালসহ কয়েকজন পাথর শ্রমিক জানান, ভাই বৃষ্টির জন্য পাথর তুলতে পারছি না। পাথর তুলেই চলে জীবিকা, সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। বৃষ্টির জন্য পাথর সাইটে কাজ করতে পারছেন না আলেয়া, বাউনি নামের কয়েকজন নারী পাথর শ্রমিক জানিয়েছেন। তারাও কাজ ছাড়া ঘরে বেকার হয়ে দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন বলে জানান।

এদিকে মৌসুমী বৃষ্টি ও আবহাওয়ায় নিয়ে আসছে শীতের আগমনী বার্তা। আশ্বিনের শেষ হয়ে কার্তিকের বৃষ্টিপাতের কারণে দিনভর উত্তরের হিমালয় থেকে কিছুটা ঠান্ডা বাতাস বয়ে নিচ্ছে শীতের আবহ। হেমন্তের আবহাওয়ায় মিলছে শীতের আমেজ। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ কিংবা আগামী নভেম্বরের শুরুতে এ অঞ্চলে শীত নামতে পারে এমনই জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস।

এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, বর্তমানে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় রয়েছে। এর পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরের উপরে জমে থাকা মেঘ দেশের উত্তরবঙ্গে ছড়িয়ে পড়ায় বৃষ্টি হচ্ছে। গত ৪৮ ঘন্টায় বুধবার সকালে তেঁতুলিয়ায় ১৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে এবং দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়ছে। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ৫৫ মিলি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে জানিয়েছেন তিনি।