চুয়াডাঙ্গায় ১টি পিঁয়াজুভাঁজার দাম ১২শ’ টাকা!

দেশের এমন কোনো জেলা নেই যে, কম বেশি চপ পিঁয়াজুসহ বিভিন্ন রকম ভাঁজা তৈরী হয় না। এছাড়াও স্বাদে গন্ধে ভালোমানের সুনামও অনেক জেলায় আছে। তবে সেই সুনাম শুধুমাত্র স্থানীয়ভাবেই সীমাবদ্ধটাই বেশি। কিন্তু সেসব সুনামের চেয়েও আরও দৃষ্টান্তমূলক সুনাম কুড়িয়ে এবার অধিকাংশ জেলার মধ্যে তাক লাগিয়ে দিয়েছে চুয়াডাঙ্গার পিঁয়াজু।

এদিকে, ভাঁজা খেতে পছন্দ করেনা এমন মানুষও খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তবে আমরা এতোদিন পিঁয়াজু খেয়ে এসেছি ঠিকই কিন্তু সেটার সাইজ সব রনজায়গায় প্রায় একই রকম হয়ে থাকে। সেটা হয়তো তালের বড়া অথবা স্বাভাবিক পিঁয়াজের মত সাইজের হয়ে থাকে। দেশের মধ্যে সর্বাধিক স্বাদে গন্ধে এবং দৃষ্টান্তমূলক সাইজের পিঁয়াজু ভাঁজা এখন চুয়াডাঙ্গায়। একেকটা সেই পিঁয়াজুর ওজন ৪ কেজি।

জেলার দামুড়হুদা উপজেলার চন্দ্রবাস গ্রামের প্রাইমারী স্কুলের সামনে দোকান দিয়ে দুই ভাই রশিদুল হক ও মফিদুল ইসলাম মিলে রমরমাভাবে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ব্যবসা।

জানা যায়, রশিদুল ও মফিদুল এর বড় ভাই আশাদুল হক ১৯৮৮ সাল থেকে প্রায় ২০ বছর ধরে সুস্বাদুর পিঁয়াজু বিক্রি করতেন। তিনি সংসার জীবনে চলে যাওয়ার পর একসময় পেশা বদল করে। পরে তারই ছোট ভাই রশিদুল ও মফিদুলকে শিখিয়ে দেন তার স্পেশাল পিঁয়াজু বানানোর কৌশল। সেই থেকে প্রায় ১৫—১৭ বছর যাবৎ ধরে এখনও পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার চন্দ্রবাস গ্রামে একটি দোকান নিয়ে আস্তো ৪ কেজি ওজনের পিঁয়াজু বানিয়ে যেমন খ্যাতি অর্জন করেছেন। আবার স্বাধে গন্ধে আত্মতৃপ্তির খায়েস মেটাতে পিঁয়াজু খেতে আসছে চুয়াডাঙ্গার জেলার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও আশেপাশের মেহেরপুর কুষ্টিয়া ঝিনাইদহসহ এমনকি ঢাকা থেকেও এই পিঁয়াজু খেতে ভিড় জমাতে আসছে চন্দ্রবাস গ্রামে।

আরেকটা বিষয় যেটি রয়েছে যে, ৪ কেজি ওজনের আস্তো পিঁয়াজু তৈরী হলেও পুরোটাই যে কিনতে হচ্ছে তাও কিন্তু নয়। এখানে কেউ একবারে ৪ কেজি কেউ একশ’ গ্রাম থেকে শুরু করে যার যতটুকু দরকার সে সেটুকুই কিনতে পারছে সবাই। কেউ ওখানে বসেই খাচ্ছে আবার কেউ কেউ পার্সেল করে বাড়িতেও নিয়ে যাচ্ছে। তবে এই সুস্বাদু পিঁয়াজু কিনতে হলে প্রায় আধাঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করতে হয় ভোক্তাদের। এতো দেরি হলেও সুস্বাদু মজার মচমচা ভাঁজা খেতে সময় নষ্ট করেও যাকাত দেয়ার মত লাইন তৈরী হয় প্রতিদিন।

এ বিষয়ে স্থানীয়রা অনেকেই বলেছেন, এখানকার পিঁয়াজু যেমন মচমচে তেমন সুস্বাদু হওয়ায় প্রতিদিন চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন অঞ্চল ছাড়াও আশপাশ জেলার মধ্যে মেহেরপুর ঝিনাইদহ কুষ্টিয়া থেকেও এই পিঁয়াজুর স্বাদ নিতে প্রতিদিনই ভিড় জমে ২/৩শ’ ভোক্তাদের। আমরা অনেক খুশি যে, বিভিন্ন জেলার মানুষ আমাদের এখানে সুস্বাদু পিঁয়াজু খেতে আসছে। এতে করে আমাদের চন্দ্রবাস গ্রামটা শ্রেষ্ঠ ভাঁজার গ্রাম হিসেবে খ্যাতি পেতে শুরু করেছে।

এ বিষয়ে রশিদুল হক ও মফিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের এই পিঁয়াজুর ওজন ৪ কেজি। প্রতিদিন প্রায় ১০০ কেজির মত পিঁয়াজু বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতি কেজি ৩শ’ টাকা করে বিক্রি করা হয়। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মত বেচাকেনা করে থাকে বলে জানান পিঁয়াজু বিক্রেতা রশিদুল ও মফিদুল।
চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলা চন্দ্রবাস একটি ছোট গ্রাম হলেও এখন এই ভাঁজার জন্য গ্রামটা খুবই আলোচিত হয়ে উঠেছে বলে জানান স্থানীয়রা।