পঞ্চগড়ে পাটের বাম্পার ফলন, দাম নিয়ে শঙ্কা স্থানীয় কৃষকরা

উত্তরের সীমান্ত ঘেষা পঞ্চগড় জেলা এবার আগাম বৃষ্টি না হওয়ায় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। যার ফলে ক্রমেই পাট চাষে আগ্রহ বাড়েছে কৃষকদের মাঝে। এদিকে ভাল ফলনে দাম নিয়ে শঙ্কায় ভুগছেন স্থানীয় কৃষকরা।

ইতিমধ্যে ক্ষেত থেকে পাট কাটা শুরু হয়েছে। অনেকে আবার  পাট পরিপত্র করার ব্যস্ত সময় পার করছেন। কিন্তু দাম নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষকেরা। সরকারি ও বে- সরকারি পাটকল গুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
 
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় ক্ষেত থেকে কৃষকেরা পাট কাটছেন। কোথাও মাঠ থেকে কাটা পাট অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন। কোথাও চলছে পাট পচানোর প্রস্তুতি। আবার পচানো পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ চলছে।
 
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েক বছর আগেও চাষিরা পাট চাষ করে লোকসানে পড়েছিলেন। তাই অনেকে বাধ্য হয়ে অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকে পড়েন। মাঝে স্বল্প পরিসরে যারা আবাদ ধরে রেখেছিলেন, তারাই লাভবান হয়েছেন। তাদের দেখেই অন্যরা আবারো পাট চাষে ফিরেছেন।

সদর উপজেলার  ৯নং মাগুড়া ইউনিয়নের পাট চাষি মকবুল হোসেন এবার তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। তিনি বলেন, গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় চলতি মৌসুমের শুরুতেই চাষিরা পাট চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন। এতে পাটের আবাদ বেড়েছে অনুকূল আবহাওয়ায় ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু পাটকলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ বছর দাম কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

জগদল হাটের পাইকারি পাট ব্যবসায়ী সোহরাফ আলী বলেন, হাটে প্রচুর পাট আসতে শুরু করেছে। এবারে বাইরের ক্রেতা কম। তারপরও চাষিরা ভালো দাম পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম মিয়া জানান, চলতি বছরে উপজেলায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের চাষাবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও অনেক ভালো। প্রতি হেক্টর জমিতে ৬ হাজার মেট্রিকটন পাট উৎপাদন হওয়ার আশা রয়েছে। 
 
পঞ্চগড় জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্ত এর কর্মকর্তা  মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় বাজারে বর্তমানে ভালো দামে পাট বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের শুরুতেই ১ হাজার ৮ শত টাকা মণ ও শেষের দিকে ৫ হাজার ৫ শত থেকে ৬ হাজার টাকা প্রতি মন দরে পাট বিক্রি হলেও চলতি মৌসুমের শুরুতেই ২ হাজার ১ শত টাকা মণ দরে পাট বিক্রি হবে আশা করা যায়।

গত বছরের তুলনায় উৎপাদন হয়েছে বেশ ভালো। স্থানীয় কৃষকরা পাট বিক্রি করে লাভবান হলে পাট চাষে তাদের আগ্রহ আরো বাড়বে। চলতি বছরে জেলায়  ৮ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে পাটের চাষাবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে গড়ে ৪২ হাজার ২ শত ৫৩ মেট্রিক টনপাট উৎপাদন হওয়ার আশা রয়েছে। তিনি আরও জানান লক্ষমাত্রার চেয়ে এবার  সদর উপজেলায় পাটের চাষ বেশী হয়েছে।