বোর্ডের কাগজ দেখিয়ে নোটারী পাবলিক সই!

শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

পঞ্চগড় সদর উপজেলার গড়িনাবাড়ি ইউনিয়ের নতুনহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুল বোর্ডের কাগজ দেখিয়ে নোটারী পাবলিক সই করে সহকারী শিক্ষক আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগে জানা যায়, গত ২৪ নভেম্বর গড়িনাবাড়ি নতুনহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই স্কুল ছাত্রীর বাবা। অভিযোগে তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে আমার মেয়েকে বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দেখায়। এতে করে প্রকার সারা না পেয়ে সহকারী শিক্ষক আব্দুর রহিম এসএসসি পরীক্ষার স্কুল বোর্ডের কাগজে আমার মেয়ের অজান্তে ঢাকা জজ কোর্টের সহকারী আইনজীবীর মাধ্যমে নোটারী পাবলিক কাগজে সই করে নেন। বিষয়টি ওই স্কুল ছাত্রীকে জানিয়ে বিভিন্ন প্রকার লোভলালশা দিয়ে ধর্ষণ করে।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী ভারসাম্য হারিয়ে অসুস্থ্য হয়ে পরলে পরিবারের লোকজন জানতে পারে সে ঘটনার বিবরণী দেয়। এতে প্রাথমিক ভাবে তার বাবা বিদ্যালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এঘটনায় জানা জানি হলে সহকারী স্কুল শিক্ষক আব্দুর রহিম ২৩ নভেম্বর প্রধান শিক্ষক বরাবরে একটি লিখিত ৬ দিনের ছুটির আবেদন করেন। স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ এলাকায় ছড়াছড়ি এবং ওই শিক্ষকের ছুটির দিন শেষ হওয়ায় স্থানীয় এলাকার অভিভাবক ও সর্বসাধারণ স্কুল এবং সড়ক অবরোধ করে।

খবর পেয়ে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে এসে পরিস্থিতি অনুকুলে আনে।

এলাকার ব্লক ওয়ার্ড সভাপতি শ্রী কালু রাম জানান, সহকারী স্কুল শিক্ষক আব্দুর রহিম ইতোপূর্বে নতুনহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের আরও এক ছাত্রীকে বিভিন্ন ভাবে প্রণচনায় ভয়ভীতি দেখিয়ে বিয়ে করেন এবং দুই থেকে তিন বছর সংসার করে তাকে ছেড়ে দেন এবং প্রথম স্ত্রীর মামলায় জেল হাজতে থাকেন তিনি। এভাবে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন এর সুষ্ঠ বিচার দাবী করছি।

ছাত্রীর চাচার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমার ভাতিজীকে দীর্ঘ তিন বছর ধরে বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দেখিয়ে আসতো। বিদ্যালয়ের কাগজে সই দেখিয়ে ভুয়া নোটারী পাবলিক কাগজ বানিয়ে তাকে ধর্ষণ করে আমি তার সুষ্ঠ তদন্তে বিচার চাই এবং ওই স্কুলে আর তাকে শিক্ষকতা করতে না দেখি।

ছাত্রী জানান, এসএসসি পরীক্ষার বোর্ডের কাগজের নামে নোটারী পাবলিক কাগজে সই করে আমার সাথে প্রতারণা এবং বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি ও লোভলালশা দেখিয়ে আমাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন আব্দুর রহিম সহকারী শিক্ষক। আমি তার আইনগত বিচার চাই।

এদিকে নতুনহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, সহকারী শিক্ষক আব্দুর রহিম ২৩ নভেম্বর একটি লিখিত ৬ দিনের ছুটির আবেদন করেন, আমি সেটা নামঞ্জুর করি। আমার স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থীর সাথে অনৈতিক সর্ম্পক ও ধর্ষণের অভিযোগ এসেছে আমার বরাবরে। এ ব্যাপারে ৫ সদস্য শিক্ষক কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তাদের প্রতিবেদনে সত্যতা উঠে আসলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৫ সদস্য বিশিষ্ট স্কুল শিক্ষক কমিটি সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গির আলম জানান, সরজমিনে তদন্ত রির্পোট প্রতিবেদন করি নাই।

অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষক আব্দুর রহিমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এব্যাপার কোন মন্তব্য করতে চায় নাই এবং ছুটির ব্যাপার কথা বললে বিষয়টি এরিয়ে যায়।