এবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসাতাপলে ৪জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি

সারাদেশের মত চুয়াডাঙ্গা থেকেও দৈন্যদশা যেন যাচ্ছে না। করোনার ভয়াবহ ঢেউয়ে অনেক মানুষকেই ভাসিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এখন মানুষ করোনা থেকে চিন্তামুক্ত থাকলেও নতুন করে ডেঙ্গু রোগ এখন মহামারি আকার ধারণ করছে। এর আগের বছরগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর শনাক্ত ও মৃত্যুর হার কম থাকলেও এবার সময়ের আগেই মাথা চাড়া দিয়ে মহামারি আকার ধারণ করছে।

করোনার মতো ডেঙ্গুও এখন মহামারি আকার ধারণ করার আশঙ্কা থাকলেও ডেঙ্গু মশা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোনো বিশেষ পদক্ষেপ না থাকায় সময়ের আগেই ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরী হচ্ছে। এতে দিন দিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও যেমন বাড়ছে তেমনী মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে।

এ বছরের প্রথম থেকেই এবার ডেঙ্গু প্রকোপ বেড়েই চলেছে। যা অসময়ে মহামারির আকার ধারণে সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। তবে গত বছরে ডেঙ্গুর ধরন এক প্রকার হওয়ায় তেমন একটা মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। এ বছর ডেঙ্গুর ৪ রকম ধরন বেড়ে যাওয়ায় রোগীর শারীরিক ধারণ ক্ষমতা পেরে উঠতে না পারায় ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে গেছে।
এই বছরের সাড়ে ছয় মাসেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট ১৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে আর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৫ হাজার ৭৯২ জন।

এদিকে, গবেষণা তথ্য থেকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগটি মৌসুমি রোগ বলে মনে করা হলেও, গত কয়েক বছর ধরে সারা বছর জুড়ে এর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্য খাতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কোনো জোরদার পদক্ষেপ না নেয়ায় ডেঙ্গুর এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। সেইসাথে দেশে পলিথিন, প্লাস্টিকের বোতলের ব্যবহার বেড়ে যাওয়া ফুলের টবসহ বিভিন্ন পাত্রে পানি জমে থাকার কারণে ডেঙ্গু রোগীও বেড়ে গেছে।‘’ এমন পরিস্থিতিতে সমাজের মানুষের সচেতনতার হার অতি নগন্ন হওয়ার কারণে আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গায় চার ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তবে সারা দেশে ডেঙ্গু রোগী ছড়িয়ে পড়লেও চলতি মৌসুমে চুয়াডাঙ্গায় প্রথম ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলো। চারজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর ভিতরে ২জন ঢাকা এবং ১জন চট্টগ্রাম থেকে অসুস্থ হয়ে এসছেন। তিনজনই চুয়াডাঙ্গার স্থানীয়।

আক্রান্ত রোগীরা হলেন, জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া মাস্টার পাড়ার নয়ন (১৭), দামুড়হুদা উপজেলার মুক্তারপুর মাঝপাড়ার আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৮), একই উপজেলার নতিপোতার মামুন হোসেন (২২)। এদের ভিতরে নয়ন চট্টগ্রামের পোর্টে শ্রমিক হিসেবে ও মামুন হোসেন ঢাকায় গার্মেন্টস কর্মী হিসেবে কর্মরত। বাকি একজনের নাম পাওয়া যায়নি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফাতেহ আকরাম বলেন, তারা হাসপাতালে এসে পরীক্ষা—নিরীক্ষার পর আক্রান্তদের শরীরে ডেঙ্গু সংক্রমণ ধরা পড়ে। পরে তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকলে শয্যা সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। সারাদেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহ রুপ নিলেও এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে চুয়াডাঙ্গায় কারো মৃত্যু হয়নি।

ডেঙ্গুর প্রধান লক্ষণ জ্বর। সাধারণত ৯৯ থেকে ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠতে পারে। জ্বরের সঙ্গে শরীরে ব্যথা, মাথা ব্যথা, চামড়ায় র‌্যাশ বা ফঁুসকুঁড়ি ওঠা, চোখে ব্যথা দেখা দিতে পারে।