পঞ্চগড়ে প্রথম বারের মত জাতীয় চা দিবস উদযাপন

পঞ্চগড়ে প্রথম বারের মত জাতীয় চা দিবসটি উদযাপন হয়। শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের হল রুমে দিবসটি উদযাপন করা হয়েছে। এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় চা বোর্ডের উদ্যোগে দিবসটি উদযাপনে আয়োজন করা হয়েছে।

গত বুধবার বাংলাদেশ চা বোর্ড আয়োজিত এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এবারের চা দিবসের প্রতিপাদ্য, ‘মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, চা শিল্পের প্রসার’। ১৯৫৭ সালের ৪ জুন প্রথম বাঙালি হিসেবে তৎকালীন চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। চা বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকা কালে এবং স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে চা শিল্পে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতিবছর ৪ জুন চা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়।

পঞ্চগড় চা বোর্ডের উদ্যোগে প্রথম জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি মোঃ আজাদ জাহান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এর পৃষ্ঠপোষকতায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি ড. সাবিনা ইয়াসমিন সম্মানিত জেলা প্রশাসক পঞ্চগড়, বিশেষ অতিথি মোঃ ইউসুফ আলী জেলা পুলিশ সুপার পঞ্চগড়, মোঃ আনোয়ার সাদাত সম্রাট চেয়ারম্যান জেলা পরিষদ পঞ্চগড়, মোঃ মিজানুর রহমান উপ-পরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পঞ্চগড়, প্রবন্ধ উপস্থাপক জনাব ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন প্রকল্প পরিচালক বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড়। আয়োজনে ছিলেন বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড়। আলোচনা সভা শেষে জেলা প্রশাসক চত্বরের সামনে চা প্রদর্শনীর পেন্ডেল সবাই ঘুরে দেখেন ।

দিবসটি উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে ড. সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ১৯৯৬ সালে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চগড় সফরে এসে চা চাষের সম্ভাবনার কথা বলেন। এ জেলায় রয়েছে চা শিল্পের অপার সম্ভাবনা।

পঞ্চগড় জেলায় ৮ টি বড় চা বাগানের পাশাপাশি প্রায় ছয় সহস্রাধিক ক্ষুদ্রায়তনের চা বাগান রয়েছে। উত্তরবঙ্গের ১৮টি চলমান চা বাগানের ১৭ টি পঞ্চগড় জেলায় অবস্থিত। বিগত বছরের জেলায় ৮,৬৪২ একর আবাদি থেকে ৯৮.৯৭ লক্ষ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। বিগত বছরের রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদিত হয়েছে। পঞ্চগড়ের যা দেশের বাজারসহ আন্তর্জাতিক বাজারে চা প্রবেশ করেছে। এখানকার অর্গানিক চা বিক্রি হচ্ছে লন্ডনের হ্যারোড অকশন মার্কেটে। রপ্তানি হচ্ছে দুবাই, চীন,জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও আরব আমিরাতে।

পঞ্চগড়ে সমতল চা মডেল কে অনুসরণ করে পার্শ্ববর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও লালমনিরহাট নীলফামারী ও দিনাজপুরের চা চাষ সম্প্রসারিত হয়েছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ নির্ভেজাল ও নিরাপদ পানীয় চা চাষ বৃদ্ধির জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালাতে হবে।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প পরিচালক ডঃ মোঃ শামীম আল মামুন বলেন, ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ চা বোর্ড কর্তৃক ১৯৯৯ সালে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও এর চা চাষের সম্ভাবনা যাচাই প্রতিবেদন ৪০,০০০ একর চা চাষ যোগ্য জমি চিহ্নিত করা হয়। বর্তমানে পঞ্চগড় ঠাকুরগাঁও লালমনিরহাট নীলফামারী দিনাজপুর জেলায় ১০,১৭০ একর জমিতে চা চাষ হচ্ছে । পঞ্চগড়ে চারপাশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন সহ অর্থ সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছে।